ডেস্ক রিপোর্ট: ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর দুই দফা দুর্যোগ দেখা দেয় সাগরে। এতে প্রথম দুই গোনে (ট্রিপ) সাগরে জাল ফেলতে পারেননি বাগেরহাটের শরণখোলাসহ উপকূলের ইলিশ জেলেরা। তা ছাড়া ওই সময় আবহাওয়াজনিত কারণে ইলিশেরও আকাল চলছিল সাগরে। এরপর আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় তৃতীয় গোনে (চলমান) সাগরে গিয়ে জাল ফেলার পর দেখা মেলে সেই কাঙ্ক্ষিত ইলিশের।
কিন্তু যে মুহূর্তে ইলিশ পড়া শুরু করেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে এসে জেলে-মহাজনদের জন্য চরম দুঃসংবাদ নিয়ে হাজির হয়েছে লঘুচাপ। এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে বঙ্গোপসাগরে শুরু হয়েছে ঝোড়ো বাতাস। উত্তাল হয়ে উঠেছে সাগর। ৩ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর।
এমন পরিস্থিতিতে আবার বন্ধ হয়ে গেছে ইলিশ আহরণ। অশান্ত সাগরে টিকতে না পেয়ে সব ট্রলার আশ্রয় নিয়েছে উপকূলের বিভিন্ন নিরাপদ স্থানে। মোংলা আবহাওয়া অফিস ও শরণখোলার জেলে-মহাজন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
শরণখোলা সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, বর্তমানে সাগরে জেলের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তার নিজের ট্রলারে ১০ লাখ টাকার ইলিশ বিক্রি হয়েছে। এছাড়া কবির আড়তদারের একটি ট্রলারে ৮ লাখ, বিলাশ রায় কালুর ট্রলারে প্রায় চার লাখ টাকার ইলিশ বিক্রি হয়েছে। কিন্তু ইলিশ পড়া শুরু হতে না হতেই হঠাৎ করে সাগরে লঘুচাপ দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সহসভাপতি এম সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বারবার আবহাওয়া খাারাপ হওয়ায় আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছি। অনেকে লাখ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সাগরে ট্রলার পাঠিয়ে খালি ফিরেছে। বর্তমানে ইলিশ পড়া শুরু করেছে। পটুয়াখালী, বরগুনার কিছু কিছু ট্রলার ৩০-৪০ লাখ টাকার ইলিশ পেয়েছে। শরণখোলার মহাজনরাও চালান ওঠার পর কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখেছেন এই গোনে। কিন্তু আবার হঠাৎ করে লঘুচাপের কারণে আমাদের হতাশায় ফেলেছে।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, ইলিশ কম বা বেশি পাওয়ার বিষয়টি ভরা কাটাল, মরা কাটালের ওপর নির্ভর করে। ভরা কাটালে ইলিশ বেশি পাওয়া যায়। কারণ এ সময় তীব্র স্রোত থাকে। বর্তমানে উত্তর বঙ্গোপসাগরে ভরা কাটাল চলছে। তাই ইলিশও ধরা পড়ছে প্রচুর। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে জেলে-মহাজনরা তাদের ক্ষতি পোষাতে পারবেন।
মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, উত্তর বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। লঘুচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। উপকূলে ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টি হতে পারে। যার ফলে সাগরে মাছ ধরারত সব নৌকা ও ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।