আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি: বরিশালের আগৈলঝাড়ার নুসরাত জাহান সিনথিয়া এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেলেও পরিবার দিনমুজর হওয়ায় ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পরেছে।
উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি ও শিক্ষার খরচের চিন্তায় পিতা ও মা তাদের চোখমুখে এখন হতাশার ছাপ।
জানা গেছে, উপজেলা সদরের এসএম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এসএসসিতে বিজ্ঞান শাখায় জিপিএ-৫ পেয়েছে নুসরাত জাহান সিনথিয়া। সিনথিয়ার পিতা মো. ছগির সিকদার তিনি পেশায় এক পত্রিকা বিক্রেতা। তিনি অন্যের পত্রিকা কমিশনে বিক্রি করে যা পান তা দিয়ে মেয়ের লেখা-পড়া ও সংসার চালান। অভাবের এই সংসারে কষ্ট করে পড়াশোনা করছেন সিনথিয়া।
উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামের পত্রিকা বিক্রেতা ও ৩ সন্তানের পিতা মো. ছগির সিকদারের বড় মেয়ে নুসরাত জাহান সিনথিয়া। তার দ্বিতীয় ছেলে হাসান সিকদার সদর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীতে লেখাপড়া করছেন। চার বছরের ছোট ছেলে হোসাইন শিবদারকে স্কুলে ভর্তি করা হয়নি। তার মা জাহানুর আক্তার সিমু একজন গৃহিণী।
সিনথিয়া জানায়, নিজে নিজে বাসায় বসে দৈনিক ১৬ ঘন্টা লেখা পড়া করেছি। শুধুমাত্র একটি প্রাইভেট পরেছি। এখন ভালো কোন কলেজে ভর্তি এবং পড়ালেখায় প্রয়োজনীয় টাকা তার পত্রিকা বিক্রেতা পিতার পক্ষে যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। অর্থের অভাবে আমার ভাল কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পরেছে। ভবিৎষতে লেখা পড়া করে ডাক্তার হয়ে দরিদ্রদের সেবা করতে চায় সিনথিয়া।
সিনথিয়ার পিতা মো. ছগির শিকদার জানান, অভাব-অনাটনের মধ্যেও পরের পত্রিকা বিক্রি করে মেয়েকে লেখাপড়া করিয়েছি। ভালো ফলাফল করেছে। সে আরও পড়তে চায়। ৫ জনের সংসারে পত্রিকা বিক্রির আয় দিয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। কিন্তু মেয়ের কলেজে পড়ালেখার খরচ কোথায় পাব। কোন রকম খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি।
এসএম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশীদ জানান, নুসরাত জাহান সিনথিয়া একজন মেধাবী ছাত্রী। গরীব পরিবারের সন্তান হয়েও ভালো রেজাল্ট করে এখন অর্থের অভাবে ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পরেছে তার। দরিদ্র হওয়ায় স্কুল থেকে সিনথিয়ার সার্বিক সহযোগীতা করা হয়েছে।