“তোমাতে রয়েছে সকল কেতাব, সকল কালের জ্ঞান,
সকল শাস্ত্র খুঁজে পাবে সখা, খুলে দেখ নিজ প্রাণ-“
একজন মানুষ যে কিনা ছোটবেলা থেকেই অভাব-অনটনে, দারিদ্র্যের সাথে সংগ্রাম করে এসেছেন।তিনি বুঝে ছিলেন সংগ্রামই তার জীবনের লক্ষ্য। ১৯১৭ সালে বাঙালী পল্টনের যোগদানের পরে ১৯১৯ সালে সালে ফিরে এসে ওই সময়ের অন্যায়, অপশাসন সাম্প্রদায়িকতার দেখে তিনি কলম হাতে নেন। তিনি “বাউণ্ডুলের আত্মকাহিনী ” প্রথম গল্প দিয়ে তার লেখা শুরু করেন। অল্প কয়েক বছরের ভিতর তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন এবং তারা বিদ্রোহী ভাব লেখার কারণে কয়েকটি গ্রন্থ তার বাতিল হয় ও তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার তাঁকে বহুবার কারাবরণ করে।
তবুও তিনি দমে যাননি নানা প্রতিকূলতার ভিতরে তিনি কলম চালিয়েছেন। ওই সময়ে সাম্প্রদায়িকতা ঘরে ঘরে ছিল। তিনি চেয়েছিলেন হিন্দু-মুসলমান হবে আপন ভাইয়ের মত। তাই তিনি হিন্দু – মুসলমানের জন্য আমৃত্যু লিখে গিয়েছেন। তিনি হিন্দু- মুসলমানকে মিলনে আনতে চেয়েছিলেন। এই কারণে তিনি হিন্দু মহিলাকে বিবাহ করেছিলেন, তারই পাশাপাশি নিজের সন্তানদের নাম হিন্দু- মুসলমানদের নাম অনুযায়ী রেখেছিলেন। অনেক অত্যাচার হয়েছে তার ওপর তবু তিনি ভয় পাননি। তিনি একহাতে লিখেছেন , ইসলামী সংগীত, আরেক হাতে লিখেছেন শ্যামা সংগীত।তিনি ছিলেন আল্লাহ ভক্ত, আবার তিনি মা কালী ভক্ত।
তিনি সমাজের অবহেলিত, নিপীড়িত, নির্যাতিত অসহায়, মানুষের জন্য তিনি কলম লিখেছেন। তিনি মনে করতেন সমাজের উপেক্ষিত মানুষেরাই সমাজের আসল ধারক ও বাহক। পৃথিবীর সকল মানুষ সমান,আর তাদের পাশে থাকবে মানুষ। এভাবেই তিনি প্রতিটি মানুষকে বুঝিয়ে ছিলেন।আমাদের বড় পরিচয় আমরা মানুষ। মানুষের উপরে কোন বড় পরিচয় নেই। মানবধর্ম ই আমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ ধর্ম।তার এক হাতে ছিল রণতূর্য আরেক হাতে প্রেম ও সাম্য। আজ তার পরিশ্রমের কারণেই বাংলা সাহিত্য এত সুন্দর, এত সমৃদ্ধ।
আজ বাংলাদেশের জাতীয় কবি, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, গল্পকার,গীতিকার, সুরকার, কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬ তম মহাপ্রয়াণ বার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি ও ভালোবাসা।
লেখক: মোঃ ইমন খন্দকার হৃদয়