ঢাকাসোমবার , ৭ আগস্ট ২০২৩
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি
  6. কৃষি
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চাকরির খবর
  10. জনদুর্ভোগ
  11. জাতীয়
  12. জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪
  13. ধর্ম
  14. নারী ও শিশু
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ষড়যন্ত্র টের পেয়েও বঙ্গবন্ধু কাউকে অবিশ্বাস করতে চাননি

নিজস্ব প্রতিবেদন
আগস্ট ৭, ২০২৩ ১:৪৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ডেস্ক রিপোর্ট : ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের আগে অন্তত দুবার আন্তর্জাতিক বন্ধুদের পক্ষ থেকে ষড়যন্ত্রের কথা বঙ্গবন্ধুকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেসব বিশ্বাস করেননি। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে—এই বার্তা তিনি নানাভাবে পেয়েও কখনোই তার চারপাশের মানুষদের অবিশ্বাস করতে চাননি। জাতির পিতা বারবারই বলেছেন, কোনও বাঙালি তাঁকে হত্যা করতে পারে না। এমনকি একটি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করছে বলে তাকে জানানো হলে, তিনি তাদের (ষড়যন্ত্রকারীদের) ‘নিজের ছেলে’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু-গবেষকরা বলছেন, তাঁর মতো দূরদর্শী মানুষ ষড়যন্ত্র টের পাবেন না, এটা বলার সুযোগ নেই। জাতির পিতা হিসেবে জাতির কাউকে তিনি অবিশ্বাস করতে চাননি।

১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে যারা হত্যা করেছিল, তারা কেউ অচেনা মানুষ না। কেবল বঙ্গবন্ধু না, তাঁর পরিবারেরও চেনা-জানা ছিল ঘাতকরূপী মানুষগুলো। তাদের একজন মেজর ডালিম। শেখ কামালের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখতো সে। ঘাতক দলে ছিলেন রশীদ ও ফারুক, তারা পরস্পরের ভায়রা ভাই। রশীদ ছিল খন্দকার মোশতাকের আত্মীয়। বঙ্গবন্ধুর ক্যাবিনেটের প্রতিমন্ত্রী নূরুল ইসলামের আত্মীয় মেজর নূর ছিল ঘাতক চক্রের আরেকজন।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর প্রতিষ্ঠাতা প্রধান রমেশ্বর নাথ কাও দাবি করেছিলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের আগে অন্তত দুবার ষড়যন্ত্রের কথা বঙ্গবন্ধুকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৯ সালে ভারতের ইংরেজি সাপ্তাহিক ‘সানডে’র ২৯ এপ্রিল সংখ্যায় গোয়েন্দা সংস্থাটির ভূমিকা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে তিনি (আর এন কাও) ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার চেষ্টা এবং তাদের পক্ষ থেকে সতর্ক করে দেওয়ার কথা জানান। আর এন কাও তার প্রতিক্রিয়ায় লিখেছিলেন, ‘‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি অসন্তুষ্ট অংশ যে শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র পাকাচ্ছে, সে তথ্য ‘র’ আগেই পেয়েছিল। আমি এ নিয়ে সে সময় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলি। তাকে জানাই, এ তথ্য আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূত্র থেকে পেয়েছি এবং এই সূত্রের নাম যেকোনও মূল্যে গোপন রাখতে হবে।’’

আর এন কাও এ বিষয়ে আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে আমি ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা যাই। এই সফরকালে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে শেষবার দেখা হওয়ার সময় আমি তাঁকে পায়চারী করতে করতে বঙ্গভবনের বাগানে যেতে অনুরোধ করি। সবার অগোচরে নিয়ে গিয়ে আমি আমার তথ্য তাঁকে জানাই যে তাঁর জীবন হুমকির মধ্যে রয়েছে। তিনি সে সময় আনন্দপূর্ণ একটি পরিস্থিতির মধ্যে ছিলেন। তিনি কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলেন, ‘ওরা সবাই আমার নিজের ছেলে। আমাকে আঘাত করবে না।’

২০২০ সালের শোক দিবসের এক অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণের সময় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, যতদূর মনে পড়ে, পঁচাত্তরের ১১ আগস্ট বিকালে গণভবনে গিয়েছি। তৎকালীন মন্ত্রী কোরবান আলী তখন সেখানে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে বললাম, আমার কিছু একান্ত কথা আছে। তিনি আমাকে ইশারায় বসতে বলে অন্যান্য কাজ সারতে থাকলেন। সন্ধ্যার পর আমাকে নিয়ে বের হলেন। গণভবনের বাগানে হাঁটতে হাঁটতে আমার কাছে জানতে চাইলেন, কী বলতে চাস? আমি জানাই, ডিজিএফআই অফিসের হাবভাব ও চলাফেরা আমার ভালো ঠেকছে না। বঙ্গবন্ধু হেসে বললেন, ‘একটু ঝামেলা ছিল, সব ঠিক হয়ে গেছে, চিন্তা করিস না।’

‘বঙ্গবন্ধু ষড়যন্ত্র টের পাননি বিষয়টি এমন না’, উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, উনি ভীষণ দূরদর্শী মানুষ ছিলেন। স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ফিরে এসে তিনি যে বক্তৃতা করেছিলেন, সেখানে বলেছিলেন যে পাকিস্তান পরাজয়বরণ করে বিদায় নিয়েছে। কিন্তু তার দোসর যারা তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। ফলে উনি জানতেন ষড়যন্ত্র চলবে, এরমধ্যে এগোতে হবে। তিনি জাতির পিতা হিসেবে জাতির কাউকে অবিশ্বাস করেন কীভাবে? তাই করেননি। মিসেস গান্ধী, ফিদেল কাস্ট্রোসহ অনেকে তাঁকে সতর্ক করে তথ্য দিয়েছেন এবং প্রতিবারই তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন এই বলে, যে বাঙালির জন্য তিনি জীবন উৎসর্গ করেছেন, তারা তাকে মারতে পারে না। রবার্ট ফ্রস্টকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন—তার সবচেয়ে বড় গুণ তিনি মানুষকে ভালোবাসেন। আর সবচেয়ে বড় দোষ হলো—তিনি মানুষকে বেশি ভালোবাসেন। এই ‘বেশি’ শব্দটা গুরুত্বপূর্ণ। বেশি ভালোবাসাটা যে তার দুর্বলতা, সেটাও তিনি উপলব্ধি করেছিলেন।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।