ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশের সাংবিধানিক ইতিহাসে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি হলো ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় দিয়ে। বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় দেন, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
রায় অনুযায়ী, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। তবে পরবর্তী চতুর্দশ জাতীয় নির্বাচন থেকে কার্যকর হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা— যা দেশের নির্বাচনব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা আনবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। রায়ের সময় আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন অসংখ্য আইনজীবী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মী।
এই মামলার ইতিহাস দীর্ঘ। ২০১১ সালের ১০ মে তৎকালীন আপিল বিভাগ ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছিল। সে রায়ের ফলে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয় এবং পরবর্তী নির্বাচনগুলো দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ৫ আগস্ট বর্তমান সরকার পরিবর্তনের পর জনমতের চাপ ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় নতুন করে আইনি লড়াই শুরু হয় এই ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে।
চলতি বছরের ২৭ আগস্ট আদালত তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন গ্রহণ করে আপিল শুনানির অনুমতি দেয়। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন নাগরিক, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার আপিল করেন। ১১ নভেম্বর যুক্তিতর্ক শেষে আদালত রায়ের দিন ঠিক করে।
আইনজীবীদের মতে, এই রায় দেশের নির্বাচনব্যবস্থার প্রতি আস্থা বাড়াবে এবং রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন ভারসাম্য সৃষ্টি করবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন— ধারাবাহিক দুই নির্বাচনের ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি রাজনৈতিক উত্তেজনা কমাতে ভূমিকা রাখবে।
