ডেস্ক রিপোর্ট : চলতি অর্থবছরে ৩৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে ‘কৃষি ও পল্লী ঋণ’ নীতিমালা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক; যা গত অর্থবছরের চেয়ে ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি।
বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে খাদ্য নিরাত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে জোর দেওয়ায় এবার কৃষি ঋণে নতুন কয়েকটি খাত যোগ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নতুন নীতিমালায় ভেনামি চিংড়ি, কাঁকড়া, কুচিয়া, কালো ধান, এভোকাডো ফল ও পাতি ঘাস চাষেও পাওয়া যাবে কৃষি ঋণ। ছাদকৃষিতেও অর্থায়ন করতে পারবে ব্যাংকগুলো।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩০ হাজার ৮১১ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ঠিক করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা ছিল তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি।
তবে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা পার করে ৩২ হাজার ৮২৮ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর একে এম সাজেদুর রহমান খান।
রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সংবাদ সম্মেলন করে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ‘কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি’ তুলে ধরে তিনি বলেন, “সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে টেকসই উন্নয়নের নির্ধারিত লক্ষ্যের দারিদ্র বিমোচন, ক্ষুধা মুক্তি এবং সুস্বাস্থ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে কৃষি ঋণ সরবরাহের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধতে জোর দেওয়া হচ্ছে।
“বিশেষ করে আমদানি বিকল্প শস্য, মসলা ও ফল চাষ বাড়াতে ঋণ বিতরণে নির্দেশনা অব্যাহত রাখা হয়েছে, যাতে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হয়।”
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, আম উৎপাদনে সপ্তম, আলু উৎপাদনে সপ্তম এবং পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম স্থানে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৫৪৫ জন গ্রাহক কৃষি ও পল্লী ঋণ নিয়েছেন, যার মধ্যে ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৯৩৩ জন নারী।
এবার রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর জন্য ১২ হাজার ৩০ কোটি টাকা, বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের জন্য ২২ হাজার ৯৭০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ধরার কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর মধ্যে ব্যাংকের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করতে হবে ৫০ শতাংশ ঋণ, যা গতবার ৩০ শতাংশ ছিল।
মৎস্য খাতে লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ১৩ শতাংশ ও প্রাণিসম্পদ খাতে লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ১৫ শতাংশ কৃষি ঋণ বিতরণের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পল্লী অঞ্চলে আয় উৎসারী কর্মকাণ্ডে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করার কথাও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
প্রাণিসম্পদ খাতে পশু-পাখি লালন পালনে নিজস্ব জমির পাশাপাশি ইজার নেওয়া জমিতে খামার স্থাপন/পরিচালনার বেলাতেও কৃষি ঋণের সুযোগ খুলে দেয়া হয়েছে এবারের নীতিমালায়।