আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ হংকংয়ের তাই পো এলাকায় পাশাপাশি থাকা একাধিক আবাসিক বহুতল ভবনে লেগে যাওয়া ভয়াবহ আগুনে প্রাণহানি ক্রমেই বাড়ছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৪ জন। দগ্ধ হয়ে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আরও ৪৫ জন। এছাড়া ২৭৯ জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, যাদের সন্ধানে উদ্ধারকাজ চলছে পূর্ণ উদ্যমে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) প্রকাশিত আপডেটে জানানো হয়, অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, ভবনে সংস্কার কাজ চলাকালীন নিরাপত্তাহীন উপকরণ ব্যবহারের কারণেই আগুন এত দ্রুত ছড়িয়েছে। জানালার অংশে স্টাইরোফোম ও পলিস্টাইরিন বোর্ড ব্যবহৃত হয়েছিল, যা দাহ্য উপাদান। বাইরে বাঁশের স্ক্যাফোল্ডিং এবং নন-ফায়ারপ্রুফ জালের উপস্থিতি আগুন নিয়ন্ত্রণে দমকলকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলে।
হংকং ফায়ার ডিপার্টমেন্টের তথ্যমতে, আটটি ভবনের মধ্যে চারটির আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরো আগুন নিভিয়ে ফেলার জন্য পুরো দিন লাগবে। আজও কিছু ভবনের জানালা ও দেয়ালের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে। শত শত বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং তাদের জন্য জরুরি আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে, এ দুর্ঘটনার তদন্তে উঠে এসেছে নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের অবহেলার অভিযোগ। পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে—দুজন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক এবং একজন প্রকৌশল পরামর্শক। পুলিশের দাবি, তাদের অবহেলার ফলেই সংস্কারাধীন ভবনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা মানা হয়নি, যা প্রাণঘাতী অগ্নিকাণ্ড ঘটতে সহায়তা করেছে।
উল্লেখ্য, হংকং ফায়ার সার্ভিস ঘটনাটিকে লেভেল-ফাইভ অ্যালার্ম হিসেবে চিহ্নিত করেছে—যা দেশটির সর্বোচ্চ সতর্কতার স্তর। এর আগে ১৯৯৬ সালে কোউলুনে লেগে যাওয়া আগুনে ৪১ জন মারা গিয়েছিল। গতকালের ঘটনা সেটিকেও ছাড়িয়ে গেছে ভয়াবহতায়।
