পটুয়াখালী প্রতিনিধি ॥ কুয়াকাটার ব্যস্ততম জিরোপয়েন্ট থেকে লেম্বুর বন পর্যন্ত বেড়িবাঁধ ঘেঁষে নির্মিত সড়কটি উপকূলীয় মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্ষা, জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের সময় এই বাঁধই নির্ভরতা। অথচ সেই গুরুত্বপূর্ণ সড়কেই চলছে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের কাজ—এমন অভিযোগে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মাঝে। সড়কটি প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ, তবে এখনও ৪০ শতাংশের বেশি কাজ বাকি।
বুধবার কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভে ‘স্টুডেন্ট এলায়েন্স’-এর ব্যানারে শিক্ষার্থীরা সড়কের মানহীন কাজের প্রতিবাদে ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালন করে। তারা সড়কে ‘কাপনের কাপড়’ বিছিয়ে প্রতীকী জানাজা পড়েন। তাদের দাবি, বিটুমিন কম, খোয়া কম এবং লবণাক্ত বালু ব্যবহার করায় সড়কটি নির্মাণের আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কার্পেটিংয়ের স্তর পাতলা, বিটুমিন সঠিকভাবে বসছে না, হাত দিয়ে টেনেই তুলতে পারছেন স্থানীয়রা। জেলে জাকির বলেন, “এই বেড়িবাঁধে অনিয়ম হলে ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের রক্ষা করার কিছুই থাকবে না।” স্থানীয় বাসিন্দা কাদের মাঝি বলেন, “এমন কাজ বন্ধ করা উচিত, মান ধরে কাজ করতে হবে।”
পর্যটকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রাজশাহী থেকে আসা মাহমুদ হাসান বলেন, “পর্যটন এলাকার রাস্তা এমন হবে—এটা খুবই হতাশাজনক।”
এ প্রকল্পের বরাদ্দ প্রায় ৩ কোটি টাকা। কাজ করছে ‘ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স’, যার মালিক জসিম মৃধা। তিনি দাবি করেন, “৪০ মিলি কার্পেটিং প্রয়োজন ছিল, বরাদ্দে দেওয়া হয়েছে ২৫ মিলি। ড্রেজিং বালুর বদলে দূর থেকে বালু আনতে হচ্ছে, তাই সমস্যায় পড়েছি।”
এলজিইডির পটুয়াখালী জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হোসাইন আলী মীর বলেন, “অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে আমরা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে। ঠিকাদারকে নিয়ম মেনে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও তদন্ত হবে।”
