আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও দাবি করেছেন যে ভারত ও পাকিস্তানের সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ তার হস্তক্ষেপে থেমে যায়। গতকাল ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএস–সৌদি ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, দুই দেশ যুদ্ধের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছিল, আর তিনি তাদের ৩৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে পিছিয়ে যেতে বাধ্য করেন।
ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, এই হুমকির পরে প্রথমে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ তাকে কল দিয়ে জানান যে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে রাজি। পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীও একই বার্তা দেন। ট্রাম্প দাবি করেন, “আমি দুই দেশের কোটি মানুষের জীবন রক্ষা করেছি।”
এই বক্তব্য ঘিরে আবারও আলোচনায় এসেছে ভারত–পাকিস্তান সংঘাতের সাম্প্রতিক উত্তেজনা। ২২ এপ্রিল জম্মু–কাশ্মিরের পেহেলগাম উপজেলায় টিআরএফ নামের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভারত অভিযোগ করে, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর–ই–তৈয়বার শাখা টিআরএফ এই হামলা চালিয়েছে।
৭ মে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে আঘাত হানে। কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী অভিযানে পাকিস্তানের ১৩ সেনাসদস্যসহ মোট ৫১ জন নিহত হন। ৭৮ জন আহতও হন। দুই দিন পর পাকিস্তান ‘বুনিয়ান উন মারসুস’ নামে পাল্টা অভিযান চালায়, যেখানে ভারতের ৫ সেনা ও ১৬ বেসামরিক প্রাণ হারান।
উত্তেজনা বাড়তে থাকায় দুই দেশের ডিজিএমও ১০ মে টেলিফোনে বৈঠকে বসেন এবং যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন, যা পরবর্তীতে কয়েক দফা বাড়ানো হয়। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ যুদ্ধবিরতিতেই রয়েছে।
ট্রাম্প এর আগেও একাধিকবার নিজেকে ভারত–পাকিস্তান শান্তি প্রক্রিয়ার নায়ক হিসেবে দাবি করেছেন। পাকিস্তান সরকার তার বক্তব্যের সত্যতা আংশিকভাবে স্বীকার করলেও ভারত এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য দেয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের বক্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি না—তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
সূত্র : জিও টিভি
