ডেস্ক রিপোর্ট ॥ গত ৩ জুন অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধনের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনে। সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রণাঙ্গনে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করা ব্যক্তিরাই ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন। অন্যদিকে কূটনৈতিক, সাংগঠনিক ও জনমত গঠনে ভূমিকা রাখা ব্যক্তিরা বিবেচিত হবেন ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে।
তবে সংজ্ঞা পরিবর্তনের ছয় মাস পার হলেও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (এমআইএস) তালিকাভুক্ত প্রায় ২ লাখ ৬ হাজার মুক্তিযোদ্ধার শ্রেণিবিন্যাস শুরু হয়নি। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সহযোগীদের জন্য আলাদা গেজেট প্রকাশের কাজও এগোয়নি।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন শ্রেণিবিন্যাস শুরু হলে সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভেদ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে—এই আশঙ্কায় আপাতত বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়েছে। দায়িত্বটি পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাও রয়েছে।
গত ২ নভেম্বর জামুকার ১০১তম সভায় পৃথক গেজেট প্রকাশের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা, মুজিবনগর সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, বীরাঙ্গনা এবং ফিল্ড হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করা হবে। অন্যদিকে সাংবাদিক, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যসহ অন্যান্যদের মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী হিসেবে আলাদা গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম বলেন, বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের তথ্য যাচাইয়ে কর্মকর্তারা ব্যস্ত থাকায় শ্রেণিবিন্যাসে সময় দেওয়া যাচ্ছে না। তাঁর মতে, ভূমিকা অনুযায়ী শ্রেণিবিন্যাস হলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আরও স্পষ্টভাবে উপস্থাপিত হবে।
