ঢাকাবুধবার , ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি
  6. কৃষি
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চাকরির খবর
  10. জনদুর্ভোগ
  11. জাতীয়
  12. জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪
  13. ধর্ম
  14. নারী ও শিশু
  15. ফিচার

পাল্টে যাচ্ছে ‌ইন্ডিয়ার নাম!

নিজস্ব প্রতিবেদন
সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩ ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ডেস্ক রিপোর্ট : হঠাৎ আলোচনায় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শক্তিধর দেশ ভারত। যার ইংরেজি নাম ‘ইন্ডিয়া’। দেশের নাম ভারত না কি ইন্ডিয়া? কোনটা থাকবে, না কি দুটোই? অবশ্য দেশটির সংবিধানে বর্তমানে ইন্ডিয়া ও ভারত দুটি নামই উল্লেখ আছে। দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ‘ইন্ডিয়া’ নামটি বাদ দিতে চাওয়ার গুঞ্জন ছিল অনেক আগে থেকেই। তবে হঠাৎ জি-২০ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিশ্বনেতাদের নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রে দেশটির নাম শুধু ভারত হিসেবে উল্লেখ করায় বিষয়টি নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে।

বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম টাইমস নাওয়ের বরাতে বলা হয়, আগামী ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে দেশের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে একটি রেজুলেশন আনতে পারে নরেন্দ্র মোদির সরকার। ওই রেজুলেশনে দেশটির নাম আনুষ্ঠানিকভাবে শুধু ভারত করা হতে পারে।

মঙ্গলবার জি২০ শীর্ষ বৈঠকে অংশ নেওয়া বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্র প্রকাশ্যে আসার পরেই জল্পনা শুরু হয়, লোকসভা ভোটের আগে দেশের নাম শুধুই ‘ভারত’ করতে চলেছে মোদি সরকার। এ সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিল পাসের জন্যই আগামী ১৮-২২ ডিসেম্বর সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে বলেও জল্পনার দানা বেঁধেছে।

সংবাদমাধ্যম টাইমস নাও জানায়, আসন্ন জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশ্ব নেতাদের নৈশভোজে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে আয়োজক দেশটির কর্মকর্তারা। ওই নিমন্ত্রণপত্রে ‘প্রেসিডেন্ট অব ভারতের’ পক্ষে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এ ধরনের নিমন্ত্রণপত্রে আগে ‘প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়া’ লেখা হতো।

বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র মঙ্গলবার তার এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) প্রধানমন্ত্রী মোদির আসন্ন ইন্দোনেশিয়া সফরের ঘোষণাসংক্রান্ত একটি সরকারি নথি প্রকাশ করেছেন। সেখানে মোদির পদ লেখা হয়েছে, ‘প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত’। যদিও সরকারি প্রথা অনুযায়ী তার পদটিকে ‘প্রাইম মিনিস্টার অফ ইন্ডিয়া’ লেখা হয়।

এ বিষয়ে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রামেশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লেখেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্ডিয়ার নাম পরিবর্তনের খবরটি সত্যি হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ৯ সেপ্টেম্বরের নৈশভোজে আমন্ত্রিত অতিথিদের নিমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়, যেখানে প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়ার পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট অব ভারত লেখা হয়েছে। সংবিধানের এক নম্বর আর্টিকেল অনুযায়ী, ‘ইন্ডিয়া, যা হলো ভারত, রাজ্যগুলোর একটি ইউনিয়ন।’ এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা ইউনিয়ন অব স্টেটকে অসম্মানিত করছে।’

এদিকে, দেশটির আনুষ্ঠানিক নাম পরিবর্তনের পক্ষে সরব হচ্ছেন ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতারা। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দেশের নাম শুধু ‘ভারত’ করার পক্ষে যুক্ত তুলে ধরেন। এক্সে এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘রিপাবলিক অব ভারত, আমাদের লোকেরা সাহসিকতার সঙ্গে অমৃতকালের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে জেনে আমি খুশি ও গর্বিত।’

কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী রাজীবচন্দ্র শেখর বলেন, ‘আমাদের দেশের নাম ভারত, এ নিয়ে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নেই। কংগ্রেস সবকিছুতেই সমস্যা দেখে।’

ভারতের প্রধান হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসের প্রধান রাজীব শেখর আরও বলেন, ‘যুগ যুগ থেকেই এই দেশের নাম ভারত। আমাদের সে দিকেই যেতে হবে। ভাষা যাই হোক না কেন, নাম একই থাকে।’

বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে কথা বলেছিলেন বিজেপির আইনপ্রণেতা নারেশ বানসাল। অধিবেশনে নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবটি তুলে ধরে তিনি বলেছিলেন, ‘ইন্ডিয়া নামটি ঔপনেবেশিক দাসত্বের প্রতীক। সংবিধান থেকে নামটি মুছে ফেলা উচিত।’

রাজ্যসভায় এই আইনপ্রণেতার বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির সংবাদ সংস্থা এএনআই জানায়, ‘ব্রিটিশরা ভারতের নাম পরিবর্তন করে ইন্ডিয়া রেখেছিল। সংবিধানের এক নম্বর আর্টিকেল অনুযায়ী, ভারতই হলো ইন্ডিয়া। শতাধিক বছর থেকে আমাদের দেশকে মানুষ ভারত নামে জানে। এটি এই দেশের প্রাচীনতম নাম, যা প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থে পাওয়া যায়। ইন্ডিয়া নামটি দিয়েছিল ঔপনিবেশিক ব্রিটিশরা। এটি দাসত্বের একটি উদাহরণ। সংবিধান থেকে ইন্ডিয়া নামটি মুছে ফেলা উচিত।’

সম্প্রতি ভারতের বিরোধীদলগুলোর নতুন জোট ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইন্ডিয়া) আত্মপ্রকাশ করেছে। নতুন বিরোধী জোটকে দুর্বল করতে ক্ষমতাসীনরা তড়িঘড়ি করে এ উদ্যোগ নিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিজেপি সরকারের দেশের নাম পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রস্তাবনার বিরোধিতা করছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির প্রধান অরিবিন্দ কেজরিওয়াল। বিজেপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যদি ইন্ডিয়া জোট নিজেদের নাম পরিবর্তন করে, তাহলে কি বিজেপি ভারতের নাম আবারও পরিবর্তন করবে? কয়েকটি রাজনৈতিক দলের জোটের কারণে কি দেশের নাম পরিবর্তন হবে? এটি ১৪০ কোটি মানুষের দেশ, কোনো রাজনৈতিক দলের না। বিজেপির ভয় ইন্ডিয়া জোট নামের কারণে তাদের কিছু ভোট কমে যাবে।’

‘ইন্ডিয়া’ নাম বাতিল করে শুধু ‘ভারত’ করা যাবে না, সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়েছিল মোদি সরকার-

এর আগে, ‘ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে বাধ্যতামূলকভাবে ‘ভারত’ নামে দেশকে চিহ্নিত করার আবেদন জানিয়ে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলা সাত বছর আগে খারিজ করে দিয়েছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আর তা করেছিল নরেন্দ্র মোদি সরকারের সম্মতিতেই।

নিরঞ্জন ভটওয়াল নামে মহারাষ্ট্রের এক ব্যক্তি ২০১৫ সালে ‘ইন্ডিয়া’ নাম বাতিল করে কেবলমাত্র ‘ভারত’ নামটিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। কিন্তু সেই সময়, সুপ্রিম কোর্টের তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুর এবং বিচারপতি ইউইউ ললিত সেই আবেদন খারিজ করে দেন।

২০১৬ সালের ওই মামলার রায় ঘোষণা করতে সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছিল, দেশের প্রতিটি নাগরিকের ‘ইন্ডিয়া’ এবং ‘ভারত’ দুটি নামই ব্যবহারের অধিকার রয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, ঘটনাচক্রে ওই রায়ের আগে ২০১৫-র নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে মোদি সরকার জানিয়েছিল, ভারতীয় সংবিধানের ১ নম্বর অনুচ্ছেদে ‘ইন্ডিয়া’ এবং ‘ভারত’ দুটি নামই রয়েছে। তার পরিবর্তন ঘটনোর প্রয়োজন নেই।

সংবিধানের ১ নম্বর অনুচ্ছেদে লেখা রয়েছে, ‘ইন্ডিয়া, অর্থাৎ ভারত, রাজ্যগুলোর সমষ্টি’। অর্থাৎ ‘ইন্ডিয়া’ এবং ‘ভারত’, দুই নামেই সাংবিধানিক সিলমোহর রয়েছে। মোদির জামানায় ২০১৬ সালে দুই বিচারপতির বেঞ্চ রায়ে ‘ইন্ডিয়া’ নাম বাতিলের আর্জি খারিজ করে বলেছিল, ‘এ ধরনের আবেদন অর্থহীন।’

দেশের নাম বদলে গেলে মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র কী হবে? ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ স্লোগানেও পরিবর্তন?

আগামী নভেম্বরে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র দ্বিতীয় পর্ব শুরু করলে কোনো নামবিভ্রাট বিতর্কে পড়তে হবে না কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি সত্যিই সংবিধান সংশোধন করে ‘ইন্ডিয়া’ ছেঁটে ফেলে শুধু ভারত নামটিকেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী হবে? নাম বদলাতে হবে মোদি সরকারের অনেক কিছুরই।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।