ডেস্ক রিপোর্ট : ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বক্তব্যের জেরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ হারানো এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস প্রাঙ্গণে আশ্রয় নিয়েছেন। আজ শুক্রবার বিকেলে তিনি দূতাবাস প্রাঙ্গণে আশ্রয় নেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘তাঁর (এমরান আহম্মদ) স্ত্রী ও তিন মেয়েসহ দূতাবাসের ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করছে।’
এমরানের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের কাছে আপনাদেরকে জানানোর মতো কোনো তথ্য নেই।’
এদিকে ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমরান স্ত্রী–সন্তানদের নিয়ে মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে একটি ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমি মার্কিন দূতাবাসে আজকে পুরো পরিবারসহ আশ্রয়ের জন্য বসে আছি। বাইরে পুলিশ। আজকে আমাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে…। আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে গত ৪-৫ দিন যাবত অনবরত হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।
এই সরকার ভালোবাসার প্রতিদান দেয় জেল দিয়ে। আমার আমেরিকার কোনো ভিসা নেই। স্রেফ ৩টা ব্যাগে এক কাপড়ে আমার ৩ মেয়েসহ কোনোক্রমে বাসা থেকে বের হয়ে এখানে বসে আছি। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।’
শান্তিতে নোবেলবিজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসকে ঘিরে একটি বক্তব্য দিয়ে কয়েক দিন ধরে আলোচনায় এমরান আহম্মদ। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলাচিঠি (বিবৃতি) পাঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে শতাধিক নোবেলজয়ী রয়েছেন।
এ বিষয়ে গত সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটি বিচারিক হয়রানি।’ শতাধিক নোবেলজয়ীর ওই খোলা চিঠির বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে, এমন দাবি করে এমরান আহম্মদ বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে এতে স্বাক্ষর করার জন্য নোটিশ করা হয়েছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’
এর পরদিন মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডিএজি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল)। তিনি যদি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন, তাহলে তাঁকে হয় পদত্যাগ করে কথা বলা উচিত, অথবা অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমতি নিয়ে কথা বলা উচিত। তিনি সেটি করেননি।’
এরপর গতকাল ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ থেকে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াকে অব্যাহতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আইমন্ত্রী আনিসুল হক আজ সকালে এমরান আহম্মদকে বরখাস্তের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
সূত্র: প্রথম আলো