ঢাকাসোমবার , ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি
  6. কৃষি
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চাকরির খবর
  10. জনদুর্ভোগ
  11. জাতীয়
  12. জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪
  13. ধর্ম
  14. নারী ও শিশু
  15. ফিচার

একটি কার্ড দিয়েই সব পরিবহণে যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছে যাত্রীরা !

নিজস্ব প্রতিবেদন
সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ডেস্ক রিপোর্ট : পার্সে বা মানিব্যাগে আধ-ডজন কার্ড নিয়ে চলাফেরা, আর তারপর নির্দিষ্ট বিল পরিশোধে – বিশেষ একটি কার্ড খুঁজে বের করার ঝামেলা – খুব শিগগিরই অবসান হবে। জলদিই এমন একটি কার্ড আসছে- যা দিয়ে সব ধরনের বিল মেটাতে পারবেন আপনি। একক এই পেমেন্ট ব্যবস্থার সুবিধা নিতে পারবেন ঢাকার বাসিন্দারা; এর মাধ্যমে ইউটিলিটি বিল, সড়ক ও সেতুর টোল, সুপারমার্কেটের কেনাকাটা থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের বেতন পরিশোধ – সব একটি কার্ডের মাধ্যমেই করা যাবে।

বহুমুখী এই কার্ডের নাম হলো- ‘র‍্যাপিড পাস’। এটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সরকারি পরিষেবার বিলও পরিশোধ করা যাবে। গ্রাহকরা তাদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট থেকে কার্ডটি রিচার্জ করতে পারবেন।

সরকার দেশের গণপরিবহন নেটওয়ার্কের মধ্যে একটি স্মার্ট টিকেট ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা করছে, তারই আওতায় র‍্যাপিড পাসের ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগে সচেষ্ট হয়েছে। পাঁচ বছর আগে এই স্মার্ট কার্ডটি ঢাকায় সীমিত পরিসরে চালু করা হয়েছিল।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক সচিব এবং সরকারের পরিবহন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে র‌্যাপিড পাসকে সর্ব-অন্তর্ভুক্তিমূলক স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই পাসের মাধ্যমে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে সারাদেশে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি), বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি), বিআরটিসি বাস, সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত সকল বাস, নৌ পরিবহন এবং ট্রেনসহ বিদ্যমান পরিবহন পরিষেবার– সব ধরনের ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন।

র‍্যাপিড পাস হলো- একটি স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধের ব্যবস্থা; বর্তমানে যা ঢাকা মেট্রোরেলের যাত্রীরা ব্যবহার করছেন। এবছরের অক্টোবর থেকে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) এবং বিআরটিসি বাসের জন্যেও র‍্যাপিড পাস চালু করা হবে।

এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী টিবিএসকে বলেন, মেট্রোরেল ও বিআরটিতে এই র‌্যাপিড পাস পাইলটিং করা হয়েছে। এখন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডাব্লিউটিসি), রেলওয়েসহ অন্যান্য খাতে চালু করা হবে।

‘সব পরিবহনের জন্য একটি কার্ড বা র‍্যাপিড কার্ড’ চালুর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে – ক্যাশলেস (নগদ টাকাহীন) লেনদেনের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে জনসাধারণের সময় বাঁচানো। পাশাপাশি ঝঞ্ঝাটমুক্ত ভ্রমণ নিশ্চিত করা। এছাড়া গণপরিবহণে স্বচ্ছতা ও শৃংখলা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোও এর লক্ষ্য- যোগ করেন নূরী।

তিনি আরো বলেন, ‘এজন্য সকল সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি পরিবহনকেও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করা হচ্ছে।’

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) এসব কার্যক্রমের সমন্বয় করবে। প্রাথমিকভাবে ডিটিসিএ’র ক্লিয়ারিং ব্যাংক – ডাচ বাংলা ব্যাংকের নির্দিষ্ট কিছু শাখায় কার্ড গ্রহীতার নাম ও মোবাইল নম্বরসহ ৪০০ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধনের মাধ্যমে র‍্যাপিড পাস সংগ্রহ করা যাবে। পরবর্তীতে তা সকল শাখা থেকেই করা যাবে। এবছরের জুলাই পর্যন্ত ঢাকায় ৬৬ হাজার ১৮০ জন এই কার্ড নিয়েছেন। প্রতি মাসে এই কার্ডের গ্রাহক বাড়ছে ২০ শতাংশ হারে।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় বলছে, এই স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা পরিবহনের ভাড়া আদায় নিশ্চিত করবে। একইসঙ্গে, যাত্রাশুরু ও গন্তব্যের (অরিজিনেশন- ডেস্টিনেশন বা ওডি) ডেটা তৈরি করবে, যা ব্যবহার করে বাস্তবসম্মত কৌশলগত নগর পরিবহন পরিকল্পনা করা সম্ভব হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা টিবিএসকে জানান, সরকার মনে করছে, স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম অনুসঙ্গ হচ্ছে স্মার্ট পরিবহন ব্যবস্থা। যেকারণে এ ধরনের একটি কার্ড প্রচলনের জন্য স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্স সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির দ্বিতীয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে থেকেই র‍্যাপিড পাস উদ্যোগ চলমান রয়েছে। এজন্য ডিটিসিএ পরিচালিত একটি প্রকল্পের আওতায় ট্রান্সপোর্ট ক্লিয়ারিং হাউজ স্থাপন করা হয়। এই প্রকল্পের লক্ষ্য একটি স্বয়ংক্রিয় ভাড়া আদায় ব্যবস্থা চালু এবং তার সাথে ভাড়া আদায় ব্যবস্থার সমন্বয়। এ প্রকল্পের আওতায় বিআরটিসি, এইচআর ট্রান্সপোর্ট, ঢাকা চাকা ও ওমামা বাস সার্ভিসে পাইলটিং হিসাবে র‍্যাপিড পাসের মাধ্যমে ভাড়া আদায় ও নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

‘এস্টাব্লিশমেন্ট অব ক্লিয়ারিং হাউজ ফর ইন্টিগ্রেটিং টিকেটিং সিস্টেম ইন ঢাকা সিটি অ্যান্ড অ্যাডজাসেন্ট ডিস্ট্রিকস’ শীর্ষক এই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের বাস্তবায়ন বর্তমানে ডিটিসিএ’র মাধ্যমে করা হচ্ছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যয় প্রায় ৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার অবকাঠামো ও নেটওয়ার্কের জন্য দিচ্ছে ৫৪ কোটি টাকা এবং জাইকা দিচ্ছে ২৯ কোটি টাকা– যা পরামর্শক ফি হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

ইতোমধ্যে ক্লিয়ারিং হাউজ সিস্টেমের সাথে প্রথম গণপরিবহন অপারেটর (পিটিও) হিসেবে মেট্রোরেল লাইন-৬ এর অন্তর্ভুক্তি শেষ হয়েছে। র‍্যাপিড পাসের মাধ্যমে মেট্রোরেল লাইন-৬ এর ভাড়া আদায় ও নিষ্পত্তি করা হচ্ছে।

ক্লিয়ারিং হাউজ(দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্পের পরিচালক মামুনুর রহমান টিবিএসকে বলেন, এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের ফেইজের মাধ্যমে ক্লিয়ারিং হাউজ স্থাপন করা হয়েছে। ক্লিয়ারিং ব্যাংক হিসেবে ডাচ বাংলা ব্যাংককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন দ্বিতীয় পর্যায় চলছে।

কোথায় পাওয়া যাবে র‍্যাপিড পাস

আপাতত ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখা ও ডিটিসিএ অফিস থেকে গ্রাহকরা এই কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রকল্প পরিচালক জানান, চেষ্টা রয়েছে জনসাধারণ যাতে খুব সহজে এই কার্ড সংগ্রহ করতে পারেন। সেজন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ সকল ব্যাংক থেকে এই কার্ড যাতে ইস্যু করা যায়– সেজন্য কাজ চলছে।

কার্ড কীভাবে ব্যবহার করতে হবে

বাস, ট্রেন, লঞ্চ এর কাউন্টারে এই কার্ড পাঞ্চ (টাচ বা ট্যাপ) করার ব্যবস্থা থাকবে। পাশাপাশি পরিবহনগুলোতে বিশেষ ডিভাইস থাকবে, যেখানে যাত্রী গন্তব্য উল্লেখ করে নিজের ভাড়া নিজেই পরিশোধ করে রসিদ নিতে পারবেন।

এই কার্ড পরিবহনে ওঠা ও নামা উভয় সময়ই ব্যবহার করতে হবে। নাহলে পরবর্তী যাত্রায় কার্ড ব্যবহার করা যাবে না।

কার্ড থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেটে নেওয়া টাকা জমা হবে ক্লিয়ারিং হাউজে। সেখান থেকে সপ্তাহ শেষে কোন পরিবহনের মাধ্যমে কত টাকা জমা হয়েছে– তা হিসাব করে সংশ্লিষ্ট পরিবহনের মালিক বা কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক মামুনুর রহমান।

প্রকল্পের আওতায় আর কি কি করা হবে?

এই ক্লিয়ারিং হাউজে বাস সার্ভিসের জন্য সর্বোচ্চ ১,০০০টি বাস ভ্যালিডেটর- এর ব্যবস্থা করা হবে। এসব ডিভাইসের মূল্য প্রাক্কলন করা হয়েছে সর্বোচ্চ ১,৩০০ ডলার। ক্লিয়ারিং হাউজের মাধ্যমে ভাড়া নিষ্পত্তি ও বিতরণ করা হবে। এজন্য সরকারি গণপরিবহন পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোকে (বাংলাদেশ রেলওয়ে, আরডিএইচ, বিআরটিসি, বিবিএ ও ডিএমপি)-কে ক্লিয়ারিং হাউজ ব্যবস্থার সাথে যুক্ত হতে হবে।

সড়ক বিভাগ মনে করছে, উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হলে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ প্রতিদিন ৪ লাখ ৮৩ হাজার মানুষ আধুনিক এই পরিবহনে যাতায়াত করবে। গত জুনে গড়ে প্রতিদিন ৭৭ হাজার মানুষ মেট্রোরেলে যাতায়াত করেছে।

সূত্র: টিবিএস

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।