বরগুনা প্রতিনিধি : সড়কটি দিয়ে ছোট ছোট ভ্যান ও ইঞ্জিনচালিত টমটমের মাধ্যমে পণ্য পরিবহন করা হয়। কিন্তু এখন যে অবস্থা, গাড়ি চলেই না। উল্টো ঠেলে সড়ক পার করতে হয়। কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের পরীরখাল এলাকার গাড়িচালক আবুল কালাম। গোলবুনিয়া এলাকার মো. রুহুল আমিনের ভাষ্য, বরগুনা-গোলবুনিয়া সড়কটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধের কারণে মাটির নিচে চলে গেছে। বরগুনা-কালিরতবকের বিকল্প সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। গর্তের কারণে গাড়ি চালাতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। দুর্ভোগের কথা বলার কাউকে পাওয়া যায় না; অনেকে আশ্বাস দিয়েও কিছু করেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্মিত অন্তত ১০০ কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। বিভিন্ন স্থানে পিচ-খোয়া উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জায়গায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে মানুষ। বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছে রোগী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। পণ্য পরিবহন দূরের কথা, চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এলজিইডির বরগুনা সদর উপজেলার অধীনে ৫৮৭টি কাঁচা-পাকা সড়ক রয়েছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন সংযোগ মিলিয়ে এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১ হাজার ৫৩৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩৩৩ কিলোমিটার কার্পেটিং, ১৩৫ কিলোমিটার আধা পাকা এবং ১ হাজার ৬৮ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক রয়েছে। তবে ৩৩৩ কিলোমিটার কার্পেটিং সড়কের মধ্যে অন্তত শত কিলোমিটারই খানাখন্দে পরিণত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
গত শনি ও রোববার সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সদর উপজেলার পরীরখাল থেকে রাখাইন পাড়া হয়ে বাবুগঞ্জ সড়ক, নিশানবাড়িয়া-সোনাতলা, বরগুনা-চালিতাতলী, বরগুনা-গোলবুনিয়া, ভূতমারা-সাহেবের হাওলা, গৌরিচন্না-ফুলঝুড়ি, ডৌয়াতলা-আয়লা বাজার, বৈকালিন বাজার-আয়লাসহ একাধিক সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে মানুষ ও যানবাহন। এই সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে জানান স্থানীয়রা।
পালের বালিয়াতলী এলাকার আব্দুল জব্বার বলেন, পরীরখাল-রাখাইনপাড়া সড়কটি অন্তত ১৫ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে। এরপর তেমন সংস্কার হয়নি। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে। সড়কটি দিয়ে কয়েকটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। তাদেরও ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। একই এলাকার মো. সুমনের ভাষ্য, সড়কটি দিয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। অন্য রোগীদের নিতে গিয়েও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
এলজিইডির অধীনের সড়কগুলো নিয়মিত মেরামত না করায় খানাখন্দ হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে বলে অভিযোগ বরগুনা যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ কমিটি ও প্রেস ক্লাবের সভাপতি সঞ্জীব কুমার দাসের। তিনি বলেন, সড়কের খোয়া-পিচ উঠে গিয়ে মানুষ চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এসব রাস্তা দ্রুত সংস্কার করার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে এলজিইডির বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কয়েকটি সড়কের প্রায় ১০ কিলোমিটার সংস্কারের কাজ চলছে। বাকিগুলোও বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে সংস্কার করা হবে।