নিজস্ব প্রতিবেদক : উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ু প্রবলভাবে সক্রিয় থাকায় বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে অতিভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বরিশাল নগরীর রুপাতলী হাউজিংসহ বেশিরভাগ সড়কে পানি জমে গেছে। টানা বৃষ্টি ও নদীতে ভরা জোয়ারের কারণে সড়কগুলোতে পানির পরিমাণ সময়ের সঙ্গে বাড়ছে।
সোমবার (৭ আগস্ট) সরেজমিনে নগরীর রুপাতলী হাউজিং এলাকায় দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো পানির নিচে চলে যাওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। ফুটপাত ছাড়িয়ে দোকানপাট ও বাসা-বাড়িতেও পানি ঢুকে গেছে।
গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া মানুষকে বাইরে বের হতে দেখা যাচ্ছে না, সড়কগুলোতেও যানবাহনের চাপ তেমন একটা নেই। টানা বৃষ্টিতে শ্রমজীবীরা চরম ভোগান্তির পড়েছেন। বৃষ্টিতে তেমন একটা কাজ না থাকায় আয়ের ওপর প্রভাব পড়েছে তাদের।
হাউজিংয়ের বাসিন্দা সুলতানা জানান, গত কয়েকদিন ধরেই হাউজিংয়ের ভেতরের সকল সড়ক তলিয়ে গেছে। আজ (সোমবার) হাটু ছাড়িয়ে গেছে। চলাচলের জন্য মানুষ রিক্সা ব্যবহার করছে। কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে চালকরা। এতে এখানকার প্রায় প্রতিটি পরিবার বিপাকে পড়েছে।
সোমবার বিকেল পৌনে ৪টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত দেশের নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বরিশাল, পটুয়াখালী, খুলনা, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ২ নম্বর নৌ-হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের অন্যত্র দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পায়রা, মোংলা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক বশির আহমেদ জানান, সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বরিশালে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৪৯ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্তই ১১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আষাঢ় মাসে স্বাভাবিকের তুলনায় কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় শ্রাবণ মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে। এ আবহাওয়া আগামী ৪৮ ঘণ্টা বিরাজ থাকতে পারে।