ডেস্ক রিপোর্ট : ভয়ভীতি প্রদর্শন, নির্বাচনী কার্যালয়সহ বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে নির্বাচন কমিশনকে (সিইসি) চিঠি দিয়েছেন বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথ।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এ আসনে নৌকার প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পরেও তার কতিপয় সশস্ত্র অনুসারিরা প্রায় প্রতিদিন নির্বাচনী আসনের বিভিন্ন এলাকায় নৌকার পক্ষে মিছিল করে হামলা, ভাংচুরসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে নির্বাচনী মাঠ উত্যপ্ত করে রাখছে। সোমবার সকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, রবিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বরাবর তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে পঙ্কজ দেবনাথ উল্লেখ করেন, বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসনে ইসির বরাদ্দ প্রতীকধারী প্রার্থী আমরা তিনজন। এরমধ্যে আমার প্রতীক ঈগল এবং মিজানুর রহমানের লাঙল ও হৃদয় ইসলাম চুন্নুর ছড়ি। এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাম্মী আহমেদ দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে প্রার্থীতা হারিয়েছেন। ফলে এ আসনে নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী নেই। অথচ হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতিক পদধারী কতিপয় দুর্বৃত্ত নির্বাচনী পরিবেশকে বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মেহেন্দীগঞ্জের উলানিয়া দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিলন চৌধুরীর নেতৃত্বে লালগঞ্জ বাজারে সন্ত্রাসীরা লাঠিসোঁটা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শাম্মি আহমেদের পক্ষে মিছিল দিয়ে ঈগল প্রতীকের সমর্থকদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্থানীয় নির্বাচনী ক্যাম্প বন্ধ করে দিয়েছে।
এরপর ২২ ডিসেম্বর উলানিয়া উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জামাল মোল্লার নেতৃত্বে শাম্মী আহমেদের পক্ষে মিছিল করে ঈগল প্রতীকের সমর্থকদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়।
এরপর ২৩ ডিসেম্বর রাতে হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া ইউনিয়নের ট্যাকের বাজারে ঝন্টু বেপারী, সালাউদ্দিন রাঢ়ী, আব্দুল করিম কবির, তানভীর মীর, কাউসারসহ তাদের সহযোগিরা ঈগলের কর্মী অহিদ সরদারকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। একইসাথে ঈগল মার্কার অফিস ভাঙচুর করা হয়।
এর আগে একইদিন চরএককরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মুকিম তালুকদারের নেতৃত্বে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চরএককরিয়া ইউনিয়নের দাদপুর তেমুহনি বাজারে নৌকার মিছিল করে মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে ঈগল মার্কার সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচারে বাঁধা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে শান্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশকে অস্থীতিশীল করে তুলছে।
একইভাবে গত ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর উল্লেখিত একই সন্ত্রাসীরা মাঝকাজি বাজারে শাম্মী আহমেদের পক্ষে মিছিল করে ঈগল প্রতীকের সমর্থকদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এছাড়া রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে হিজলা উপজেলার ধুলখোলা ইউনিয়নের আলীগঞ্জ বাজারে ঈগল মার্কার প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করার সময় জামাল ঢালী, রবি ঢালী, সালাউদ্দিন, নিজামসহ তাদের সমর্থকরা হামলা চালিয়ে আলিগঞ্জ বাজার মন্দির কমিটির সভাপতি রামপ্রসাদের বাড়ি ভাঙচুর করে। এ অবস্থায় এসব দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ও শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন পঙ্কজ দেবনাথ।
সার্বিক বিষয়ে হিজলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুবাইর আহমেদ জানান, ধুলখোলার ঘটনায় দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। পাশাপাশি রাম প্রসাদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।