এইচ.এম.এ রাতুল: সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বরিশাল জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে জামানত হারিয়েছেন ২৫ জন প্রার্থী। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা জামানত হারিয়েছেন পাঁচটি আসনে। এছাড়া জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও রয়েছেন এই তালিকায়।
মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের একভাগ ভোট না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয় বলে জানিয়েছেন জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সি। জেলার ৬টি আসনে ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। অন্য ১০ জন প্রার্থী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করে তাদের জামানত ফেরত নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা বরিশালের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আশানুরূপ ভোট না পাওয়ায় বরিশাল-১ আসনে ৩ প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন জাতীয় পার্টির ছেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. তুহিন।
বরিশাল-২ আসনে ৭ জন প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন ৫ জন। এরা হলেন তৃনমূল বিএনপি’র মো. শাহজাহান সিরাজ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নকুল কুমার বিশ্বাস, জাতীয় পার্টির মো. ইকবাল হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সাহেব আলী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মনিরুল ইসলাম।
বরিশাল-৩ আসনে ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জন হারিয়েছেন জামানত। এরা হলেন ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী টিপু সুলতান, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. শাহজাহান, তৃণমূল বিএনপি’র শাহানাজ হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আমিনুল হক।
বরিশাল-৪ আসনে ৩ প্রার্থীর মধ্যে ২ জন জামানত হারিয়েছেন। এরা হলেন জাতীয় পার্টির মো. মিজানুর রহমান ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের হৃদয় ইসলাম চুন্নু।
বরিশাল-৫ আসনে ৬ প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন ৪ জন। এরা হলেন ন্যাশানাল পিপলস পার্টির আবদুল হান্নান সিকদার, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মাহাতাব হোসেন, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. আসাদুজ্জামান এবং জাতীয় পার্টির মো. ইকবাল হোসেন।
এছাড়া বরিশাল-৬ আসনে ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে ৮ জন জামানত হারিয়েছেন। এরা হলেন ৩ বারের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির প্রার্থী নাসরিন জাহান রতœা, জাসদের মোহাম্মদ মোহসীন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. মাইনুল ইসলাম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. মোশারফ হোসেন, তৃণমূল বিএনপি’র টিএম জহিরুল হক তুহিন এবং ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুল ইসলাম খান, মো. শাহবাজ মিঞা ও মো. জাকির খান সাগর।
বরিশাল জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সি বলেন, নির্বাচনি আইন অনুযায়ী একটি আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের কম ভোট পেলে ওই প্রার্থী জামানত ফেরত পাবেন না। জেলার ৬টি সংসদীয় আসনে ৩৫ প্রার্থীর মধ্যে ২৫ জনই স্ব-স্ব আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের কম পেয়েছেন। এ কারণে ২৫ প্রার্থী জামানতের অর্থ ফেরত পাবেন না।
বরিশাল জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম জানান, সব প্রার্থীর জামানতের অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা আছে। যেসব প্রার্থী মোট প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের কম পেয়েছেন তারা জামানতের অর্থ ফেরত পাবেন না। আর যারা ৮ ভাগের একভাগ বা তার চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন তারা রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করলে তাদের প্রাপ্ত ভোট যাচাই করে জামানতের অর্থ ফেরত দেয়া হবে।