ডেস্ক রিপোর্ট: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন ‘১৮ সালের মতো ভোট হলে এবার বিএনপিকে কচুকাটা করবে আ. লীগ’। শেখ হাসিনার অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে কবর দিয়েছে। যেভাবেই হোক ক্ষমতায় যেতে হবে―এটিই তাদের একটিমাত্র লক্ষ্য। এ জন্য তারা প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।
সংবিধান লঙ্ঘন করে তারা সব কিছু দলীয়করণ করেছে। আওয়ামী লীগের অধীনে অতীতের দুটি নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করেনি। তারা গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে। এখন নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগ সারা দেশে ডিসি, এসপি ও প্রশাসনকে নিজেদের মতো করে সাজাচ্ছে, যারা তাদের কথা শুনবে।
আজ বুধবার দুপুরে তার নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের কালীবাড়ি মির্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীরা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষপাতিত্ব করতে পারবেন না, ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে তাদের কাজ করতে হবে। কিন্তু এখনকার ডিসি-এসপিরা আওয়ামী লীগের বাবা, তারা আওয়ামী লীগের হয়ে ভোট চায়, হুমকি দেয়, যা অন্যায়। এই সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করেছে।
বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও পত্রিকায় বিএনপির অনেক সমালোচনা প্রচার করা হলেও আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি, নেতাদের দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হয় না।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লুটপাট সব কিছুকে ছাড়িয়ে গেছে, তারা উন্নয়নের টাকা মেরে দিয়ে নিজেদের উন্নয়ন করছে। যেখানে হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় মানুষ মারা যায় সেখানে বড় বড় শহরে উড়াল সড়ক ও উন্নয়নের নামে লুটপাট করা হচ্ছে। দেশের সমস্ত শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। যদি একটি জাতিকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা না যায় তাহলে সেই জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। সেই শিক্ষা খাতেও চুরি ও দুর্নীতি দিয়ে ভরে গেছে।’
ফখরুল আরো বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালে বিরোধী শক্তির হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। তারপর অনেকেই ভেবেছিল বিএনপি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। কিন্তু বিরূপ প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়েও সে সময় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ ও রাজনৈতিক দর্শনকে ধারণ করে বিএনপির হাল ধরেছিলেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তখন থেকে আপসহীন এই নেত্রী কারো কাছে মাথা নত করেননি। তারই নেতৃত্বে ১৯৯০-এ এরশাদ সরকার পদত্যাগ করে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল আরো বলেন, ‘এখন আর বসে থাকার সময় নেই, জেগে ওঠার সময় এসেছে। এবার নির্বাচন ১৪, ১৮ সালের মতো করে নিয়ে গেলে বিএনপিকে কচুকাটা করবে। তাই সাহস নিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। একবার মরতে হবে, বারবার নয়।’
জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফসহ বিএনপির জেলা উপজেলার বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।