বিনোদন ডেস্ক: পরীমণি-রাজের দাম্পত্য কলহের গল্প নিত্যদিনের খবরের শিরোনাম হচ্ছে। অবশ্য এটা নিয়ে তারা দুজন মোটেও ভাবছেন কি না—তা নিয়ে সন্দেহ আছে অনেকের। তবে এই জুটিকে নিয়ে এরকম ‘সস্তা’ আলোচনা নেটমাধ্যমে রীতিমতো ট্রোলের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ কেউ তো বলছেন—সম্পর্কের ক্ষেত্রে এরা দুজন (রাজ-পরী) গিরগিটির মতো রং পাল্টায়।
অবশ্য সমালোচকদের কাছে এরকম সমালোচনা করার উপযুক্ত কারণও আছে। যেভাবে তারা তাদের ব্যক্তিজীবনকে প্রকাশ্যে আনছে, এতে করে তাদের প্রতি দর্শকের ঘৃণার পরিমাণ বাড়ছে বলে মনে করছেন বোদ্ধারা। তবে রাজ-পরী বাঁচেন নিজের খেয়ালে। সমালোচনাকে মোটেও পরোয়া করেন না, তাই তো একবার একে অপরকে জড়িয়ে ধরলেও পরক্ষণেই বিবাদে জড়িয়ে ঘটান রক্তারক্তি কাণ্ড!
শোনা যাচ্ছে, এক পরিচালকের অফিসে মারামারি করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন পরীমণি ও রাজ। এ ঘটনায় নাম জড়িয়েছে আরেক চিত্রনায়িকা তমা মির্জার। রাজ-পরীর মারামারি থামাতে গিয়েই নাকি আহত হয়েছেন তিনি। যার জেরে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে তাকে।
এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন তমা। জানালেন, শুক্রবার (১৮ আগস্ট) মার খেয়ে নয়, বরং জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও মাথা ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। তবে এদিন নায়িকা পরীমণির ওপর কিছুটা ক্ষোভও ঝাড়েন তমা মির্জা।
তিনি বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে কেউ কারো হাতে মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে কি চেকইন দেয়? আমি কিন্তু হাসপাতালে ঢুকেই সেটা দিয়েছি। দ্বিতীয়ত, আমি সেই মেয়ে, যে স্বামীর হাতের মার খেয়ে ঘর ছেড়েছি। সেটার প্রকাশ্য প্রতিবাদ করার জন্য যা যা করা দরকার করেছি। তো সেই মেয়েটিকে অন্য কারো জামাই এসে মেরে চলে যাবে, আর আমি চুপচাপ হাসপাতালে শুয়ে কাঁদবো- সেটা তো কল্পনাই করতে পারি না।’
তার কথায়, ‘আমার বক্তব্য স্পষ্ট, রাজ-পরীর মারামারির যে ঘটনার কথা বলা হচ্ছে, সেটার আশপাশেও আমি ছিলাম না। এমনকী ১৮ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজ-পরী বাসা থেকে বেরিয়ে আমাকে ফোনও করেছে দেখা করার জন্য। আমি বলেছি, আমার জ্বর। আজ দেখা হবে না। এরপর পরী বলল, ওকে বাসায় রেস্ট নাও। কাল দেখতে আসব। এর মধ্যে কী হলো, আমি আর জানি না।’
তার ও পরীমণির একসঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বিষয়ে তমা বলেন, ‘১৮ আগস্ট সন্ধ্যার পর জ্বরের অবস্থা খারাপ হওয়ায় আমি ১০টার দিকে হাসপাতালে যাই। ভর্তি হই। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সবাই জানেন, আমার অ্যাজমাটিক প্রবলেম রয়েছে। কিডনিতেও সমস্যা রয়েছে। ফলে শরীরে যাই হোক, তখন এগুলো জেগে ওঠে। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আমি ওষুধ খেয়ে তো অচেতন অবস্থা। হঠাৎ আম্মু ডেকে উঠিয়ে বলল, পরী এসেছে। উঠে দেখি পরী হুইল চেয়ারে। সঙ্গে রাজ্য-চয়নিকা বউদি, নাচের দুটো ছেলেসহ বেশ কয়েকজন আমার কেবিনে। পরী বললো, ওর জ্বর এসেছে। তাই চলে এসেছে। এরপর কাশতে কাশতে গল্প করলাম, সেটাই শেষ।’
তবে কিছুটা অভিমান জমেছে অভিনেত্রীর মনে। তার ভাষায়, “সেদিন রাতে ক্যানুলা হাতে তাদের দুই হাতের ছবি ফেসবুকে পোস্ট না করলে তাকে ‘মার খাওয়া’র গল্পটা শুনতে হতো না। এটা পরীমণি ঠিক করেনি।”
তমা মির্জা যেহেতু পরীমণির খুব কাছের সেহেতু ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে হয়তো তিনি কিছুটা জানেন। এ ব্যাপারে ‘সুড়ঙ্গ’ খ্যাত এ অভিনেত্রী বলেন, ‘পরী আমাকে এ বিষয়ে কিছুই শেয়ার করেনি। হতে পারে আমার শরীর খুবই খারাপ, তাই। হতে পারে, বলার মতো কিছুই ঘটেনি। তবে আমি পরীকে যতটুকু এখন দেখছি, সে তার রাজ্য ছাড়া পৃথিবীর আর কিছুর সঙ্গে নেই। না শুটিং, না মডেলিং, না আড্ডা। তার পুরো দুনিটাই এখন রাজ্য। ওর সুখটাই পরীর সুখ।’
গত ১০ আগস্ট ছেলে শাহীম মুহাম্মদ রাজ্যর প্রথম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেন পরীমণি। এদিন কোথাও দেখা যায়নি শরিফুল রাজকে। এর সপ্তাহখানেকের মাথায় গত বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে গানবাংলার অফিসে কৌশিক হোসেন তাপস ও ফারজানা মুন্নী দম্পতির উদ্যোগে ছেলের জন্মদিনের কেক কাটেন রাজ-পরী। সেখানে তাদের দুজনের হাস্যোজ্জ্বল ও জড়িয়ে ধরার দৃশ্য প্রকাশ্যে এলে অনেকেই ভাবেন, এই বুঝি মিলে গেল তারা। কিন্তু এর পরদিনই যে ঘটনা ৩৬০ ডিগ্রি মোড় নেবে, তা হয়তো ভাবতেন না খোদ ক্রিস্টোফার নোলানও (থ্রিলার সিনেমার সেরা একজন নির্মাতা)!