ডেস্ক রিপোর্ট : জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে এসিল্যান্ড পরিচয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কয়েকটি বেকারী ও হোটেল ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে টাকা নেওয়ার চেষ্টাসহ একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১২ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আয়মারসুলপুর ইউপির দফাদার রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় টাকা প্রদানকারী একটি প্রতিষ্ঠানসহ ভুক্তভোগী হোটেল ও বেকারীর মালিকরা প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আয়মারসুলপুর ইউনিয়নের ছোট্ট মানিক গ্রামের বৈশাখী বেকারী এবং শালপাড়া বাজারের ভাইবোন কনফেকশনারী এন্ড ফল ভান্ডার, ভিআইপি কনফেকশনারী এন্ড দই মিস্টি ভান্ডার, ইসমাইল হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্ট, বাবু হোটেল সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে।
অভিযুক্ত রুহুল আমিন আয়মারসুল ইউনিয়নের কৃষ্টপুর গ্রামের মৃত সাদেক আলীর ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার ৩নং আয়মারসুলপুর ইউপির দফাদার মোঃ রুহুল আমিন উল্লেখিত হোটেল ও বেকাররীর মালিকদের তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন ধরিয়ে দিয়ে বলেন এসিল্যান্ড স্যার কথা বলবেন । তখন রুহুল আমিনের মোবাইল ফোনের অপর প্রান্তে কথা বলা ব্যক্তি নিজেকে এসিল্যান্ড পরিচয় দিয়ে বলেন, ব্যবসায়ীদের হোটেল গুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও ভেজাল পণ্য আছে মর্মে তার নিকট তালিকা আছে। আগামীকাল বাজারে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা হবে এবং সেখানে ১ লক্ষ টাকা করে জরিমানা ও জেল হতে পারে।
এ অবস্থায় তালিকা থেকে নাম কর্তন করতে চাইলে এই মূহুর্তে ০১৯৩৮-৭৪৩১৭০ নগদ একাউন্টে ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত পাঠাতে বলেন। এ অবস্থায় প্রতারনার ফাঁদে পা দিয়ে ভাইবোন কনফেকশনারী এন্ড ফল ভান্ডারে মালিক বজলুর রশিদ ১২ হাজার টাকা প্রদান করেন। একই ভাবে অন্যান্য বেকারী ও হোটেলের মালিকদের অপারগতা সহ বিকাশ এজেন্টের সন্দেহ হওয়াই প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পান তারা।
ভাইবোন কনফেকশনারী এন্ড ফল ভান্ডারের মালিক বজলুর রশিদ বলেন,দফাদার রুহুল আমিন এসে এসিল্যান্ড কথা বলবে বলে তার ফোনটি আমাকে দেন এবং বলেন আপনি স্যারের সাথে কথা বলেন। আমি অশিক্ষিত মানুষ,দফাদারের কথায় বিশ্বাস করে তার ফোনেই আমি কথা বলি। জেল জরিমানার কথা ভেবে ভয়ে তার দেওয়া নাম্বারে নগদে টাকা পাঠাই।
বাবু হোটেলে মালিক বাবু বলেন,আমরা গ্রামের পরিবেশে হোটেল ব্যবসায় যতটা সম্ভব ভাল পরিবেশে মানুষদের খাওয়ানোর চেষ্টা করি। গত বৃহস্পতিবার আয়মারসুলপুর ইউপির দফাদার রুহুল আমিন তার ফোনটি আমাকে দিয়ে বলেন এসিল্যান্ড স্যার কথা বলবেন। তার পর আমি কথা বলে বিকাশের দোকানে গেলে এজেন্ট এটি প্রতারক বলে জানালে আমি প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পাই।
ইউনিয়নের দফাদার রুহুল আমিনের নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের নিকট বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। তবে তিনি বলেন,এ ব্যাপারে পাঁচবিবি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি সেটিই আমার বক্তব্য। উক্ত বক্তব্যে তিনি ইউপি সদস্য আনোয়ারের নিকট থেকে নির্দেশনা পেয়ে বেকারী ও হোটেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।
এসিল্যান্ড মারুফ আফজাল রাজন বলেন, মৌখিক অভিযোগ পেয়ে বিষয় তৎক্ষনাত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। প্রতারকের মোবাইল নাম্বারটি ট্র্যাক করার জন্য ওসিকে বলা হয়েছে।
পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা সুলতানা জানান, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি,সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।