ঢাকাবুধবার , ৮ নভেম্বর ২০২৩
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি
  6. কৃষি
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চাকরির খবর
  10. জনদুর্ভোগ
  11. জাতীয়
  12. জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪
  13. ধর্ম
  14. নারী ও শিশু
  15. ফিচার
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অবৈধ যানবাহনে বরিশাল নগরজুড়ে সীমাহীন ভোগান্তি!

নিজস্ব প্রতিবেদন
নভেম্বর ৮, ২০২৩ ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ডেস্ক রিপোর্ট : পরিকল্পনাহীনভাবে বরিশাল নগরীতে হাজার হাজার থ্রি-হুইলার ও ইজিবাইক চলাচলের অনুমতি দেওয়ায় সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়ছে বাসিন্দারা। দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা আর বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) রাজনৈতিক ফায়দা নিতে অবৈধ যানবাহনকে বৈধতার মোড়কে আবৃত করার চেষ্টায় এমন পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, পৌরসভা থেকে ২০০২ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর থেকে এ অবধি ২ হাজার ৬১০টি পায়ে চালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি দিয়েছে নগর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া নাগরিকদের ব্যয় ও ভোগান্তি কমাতে প্রথমে ২০০৩ সালে নথুল্লাবাদ থেকে রূপাতলী রুটে বিআরটিসি দ্বিতল বাস সার্ভিস চালু করে। যদিও পরে তা অজানা কারণে ২০০৫ সালে বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময়ের মেয়রের নেতৃত্বাধীন পরিষদ থ্রি-হুইলারের প্রতি বেশি আন্তরিক হওয়ায় ওই সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায় বলে জানা যায়। এরপর ২০০৯ সালে সার্ভিসটি পুনরায় চালু করে তৎকালীন মেয়র প্রয়াত শওকত হোসেন হিরন। যা চালু ছিল পরবর্তী মেয়র আহসান হাবিব কামালের পরিষদ পর্যন্ত। যদিও ২০১৩ সালে কামালের আমলেই চূড়ান্তভাবে সেই সার্ভিস বন্ধ হয়ে এখনো চালু হয়নি।

সিটি বাস সার্ভিস চালুর জন্য নগরবাসীর পক্ষ থেকে দফায় দফায় দাবি উঠলেও রহস্যজনক কারণে এ বিষয়ে আগ্রহ দেখায়নি নগর কর্তৃপক্ষ। এমনকি সদ্য বিদায়ী মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর সময়েও একই দাবি ওঠে। কিন্তু তিনিও সিটি বাস সার্ভিসের প্রতি আগ্রহ না দেখিয়ে পাঁচ হাজার ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক (হলুদ অটো) নগরীতে চলাচলের অনুমতি দেন। এতে করে ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী। তিনি প্রায় তিন হাজার ইজিবাইক শ্রমিকদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন। তিনি বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রায় ৫ হাজার ইজিবাইককে চলাচলের অনুমতির সাপেক্ষে একটি টোকেন দিচ্ছেন। অথচ সিটি করপোরেশন এই ধরনের যানবাহন চলাচলের লাইসেন্স দেওয়ার কোনো এখতিয়ার রাখেন না। ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের খসড়া নীতিমালা ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে বিআরটিএ। নীতিমালাটি এখন আইনের সঙ্গে যুক্ত করে নেওয়ার অপেক্ষা। বাংলাদেশের যত গাড়ি চলে তা ১৯৮৩ সালের মটরযান অধ্যাদেশের অনুকূলে চলে। যাতে ইজিবাইক সর্ম্পকে কোনো নির্দেশনা নেই। কারণ তখন ইজিবাইক ছিল না। ইজিবাইকের নীতিমালা আইনের সঙ্গে যুক্ত করা হলেই বিআরটিএ লাইসেন্স দিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সিটি করপোরেশনের আইনে রয়েছে শুধু পায়ে চালিত রিকশা ও ভ্যানগাড়ির লাইসেন্স তারা দিতে পারবে। যান্ত্রিক কোনো যানবাহনের লাইসেন্স দেওয়ার এখতিয়ার নেই। কিন্তু এবার বরিশাল সিটি করপোরেশন লাইসেন্সের নামে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাদের মাধ্যমে টোকেন বিতরণ করেছে। এটি ইজিবাইক চালকদের সঙ্গে প্রতারণা, যার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। রাজনৈতিক কারণে এসব দিচ্ছে সিটি করপোরেশন।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইজিবাইক চালকদের লাইসেন্সের দাবিতে ডা. মনীষা চক্রবর্তী আন্দোলন করায় ইজিবাইক শ্রমিকদের একছত্র সমর্থন তিনি পাচ্ছিলেন। সেখান থেকে নজর সরাতে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ টোকেন বিতরণ শুরু করেন। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারাও জানেন এসব যানবাহনের লাইসেন্স দেওয়ার এখতিয়ার তাদের নেই, কিন্তু মেয়রের চাপের মুখে টোকেন বিতরণ করছেন। ওই কর্মকর্তারা জানান, নগরীতে আনুমানিক ১২ থেকে ১৪ হাজার থ্রি-হুইলার ও ইজিবাইক চলাচল করে।

সুমন প্যাদা নামে একজন ইজিবাইক চালক বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে সিরিয়াল দিয়ে টোকেন নিয়েছিলাম। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ জানিয়েছে তাতে কাজ হবে না। তাদের কথামতো না চললে গাড়ি জব্দ করবে। আমরা আছি মহা বিপদে, কার কথা শুনবো? সিটি করপোরেশন নাকি ট্রাফিক পুলিশ নাকি বিআরটিএ? চার বছর ধরে আমি হলুদ অটো চালাই। চার বছর আগে শহরে ৫ হাজার গাড়ি থাকলে এখন আছে অন্তত ১৫ হাজার। কারো কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বেসামাল হয়ে গেছে।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রকৌশলী আতিকুর রহমান শিমুল বলেন, শহরটি দিনদিন বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। হলুদ অটো (ইজিবাইক), ব্যাটারি চালিত রিকশা, সিএনজি, গ্যাস সিলিন্ডারবাহী নীল অটো, মাহিন্দ্রা (থ্রি-হুইলার) দিন দিন বাড়ছে। সিটি করপোরেশন, বিআরটিএ কেউ এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছে না। এখন নিয়মিতই শহরে যানজট লেগে থাকে। তার ওপরে জানতে পারলাম সিটি করপোরেশন নতুন করে ৫ হাজার হলুদ অটোকে টোকেন দিয়েছে। এ সিদ্ধান্ত হঠকারী।

বিআরটিএ বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জিয়াউর রহমান বলেন, বিআরটিএ বরিশাল শহরে কোনো ইজিবাইক চলাচলের অনুমতি দেয়নি। সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ রাজনৈতিক বিবেচনায় ৫ হাজার ইজিবাইককে চলাচলের অনুমতি দিচ্ছেন। এটি অফিসিয়াল কোনো সিদ্ধান্ত না। শহরে অনেক ইজিবাইক চলাচল করছে। সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই তার মত করে অনুমোদন দিয়েছেন। বিআরটিএ বরিশালে এখন পর্যন্ত প্রথম দফায় ১ হাজার ৯২৯টি থ্রি-হুইলার, পরে আরও ৫৭১টি সহ মোট ২৫০০টি গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। এর বাইরে যে-সব গাড়ি চলছে সেগুলো অবৈধ। অবৈধ গাড়িগুলোকে বিআরটিএ ছাড়া কেউ চলাচলের অনুমোদন দিতে পারে না।

এসব বিষয়ে সিটি করপোরেশনের যানবাহন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল কবিরের বক্তব্য নিতে তার দপ্তরে সোমবার ও মঙ্গলবার দুপুরে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর অ্যাসিড ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয় সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বেঞ্চ। বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এসব গাড়ি আমদানির ওপরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।