ঢাকারবিবার , ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি
  6. কৃষি
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চাকরির খবর
  10. জনদুর্ভোগ
  11. জাতীয়
  12. জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪
  13. ধর্ম
  14. নারী ও শিশু
  15. ফিচার

অধরাই থেকে গেল বরিশালের লাকুটিয়া খাল! উদ্বীগ্ন সচেতন মহল

নিজস্ব প্রতিবেদন
ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪ ১১:২৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

এইচ.এম.এ রাতুল: দখল-দূষণ আর অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে বরিশাল নগরীর ২২টি খাল। যদিও গত বছর ডিসেম্বরে মৃতপ্রায় খালে পানিপ্রবাহ ফেরাতে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে সাতটি খাল খনন শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে এক সময়ের খরস্রোতা রায়ের খালটি (লাকুটিয়া খাল) খননের কোন পরিকল্পনা বা প্রস্তাবনা কোনটিই আপাতত নেই বলে জানিয়েছেন বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। ফলে অধরাই থেকে যাচ্ছে এক সময়ের খরস্রোতা এ খালটি। অথচ প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাব, দখলদার এবং বিসিক শিল্প কারখানা ও বাসা বাড়ির বর্জ্য এবং মরা পশু পাখি খালে ফেলার কারণে যে টুকু পানি আছে তাও ব্যবহারের অনুপযোগী এবং দূর্গন্ধে খালের পাশের সড়ক দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচল করা দায় হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন পর খাল খননের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও এ খালটি খননের আওতায় না থাকার কারণে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ উদ্বীগ্ন।

সূত্রমতে, নগরীর ১নং ওয়ার্ড মরকখোলা পোল থেকে লাকুটিয়া খালটির দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৭ কিলোমিটার। যার মধ্যে ৩ কিলোমিটার সিটি কর্পোরেশনের আওতায় এবং বাকী ৪ কিলোমিটার ইউনিয়ন পরিষদের আওতায়। সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন অংশে কর্পোরেশনের বর্জ্য নিষ্কাশনের ড্রেন, খাল পাড়ের বাসিন্দাদের ঝুলন্ত, টয়লেট, ব্যবহারিক বর্জ্য এবং বিসিক শিল্প কারখানার বর্জ্য এ অংশটি গ্রাস করে ফেলেছে। বিভিন্ন স্থানে খালের দুই পাড়ে অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠায় বিঘিœত হচ্ছে পানির স্বাভাবিক গতি। পানি কমে স্থানে স্থানে জেগে উঠেছে আবর্জনার স্তুপ। খালের কোথাও কোথাও মরা কুকুর, গরু, ছাগল, বিড়াল এবং মরা হাস-মুরগী ফেলে রাখা হয়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন খালটি পরিস্কার না করায় বিভিন্ন স্থানে লতা-পাতা ঘাসের স্তুপও রয়েছে। যাতে ময়লা আবর্জনা আটকে পানি নষ্ট হয়ে গেছে এবং মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

স্থানীয় প্রবীন বাসিন্দারা জানান, আশির দশকের দিকে খালের পানি ছিল পরিষ্কার। যার গভীরতা ছিল ৩০-৫০ ফুট। গয়না নৌকায় করে বাবুগঞ্জ, গৌরনদী, মুলাদী, হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার লোকজন এই খাল ধরে যাতায়াত করত। ১৯৮৭-৮৮ সালে ঐতিহ্যবাহী লাকুটিয়া খালের দু’দিকে দুুটি স্লইস গেট স্থাপন করা হলে খালটি প্রথম নাব্যতা হারায়। এরপর আস্তে আস্তে দখল আর দূষণে নাব্যতা হারাতে শুরু করে খালটিতে। ২০১৬ সালে খালটির অবৈধ দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান চালান তৎকালীন জেলা প্রশাসক ড. গাজী সাইফুজ্জামান। তবে উচ্ছেদের পর দীর্ঘ প্রায় দুই বছর খননের কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় পুনরায় দখল শুরু হয়। এরপর ২০১৯ সালে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর বেশ তোরজোর চালিয়ে উচ্ছেদ নোটিশ দেয়। তবে তা আলোর মুখ দেখেনি। বর্তমানে খালটির দু’পারেই দখল চলমান রয়েছে। এমনকি খালের একাধিক স্থানে বাঁধ দিতে দেখা গেছে। এদিকে সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড নগরীর ৭টি খাল খনন কার্যক্রম শুরু করার পর জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে ৭দিনের আল্টিমেটাম দেয়। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযান না চালানোর কারণে থেমে যায়নি দখলদারিত্ব। প্রতিনিয়ত বাড়ছে দখল দারিত্বের সংখ্যা।

বরিশাল নদী-খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন বলেন, খালগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। কিন্তু তাদের অবহেলার কারণেই আজ খালটির এ অবস্থা। এ ব্যাপারে যদি সিটি কর্পোরেশন জোড়ালো ভুমিকা রাখতো তাহলে এ অবস্থা তৈরী হতো না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)র বরিশালের সমন্বয়কারী লিংকন বায়েন জানান, ১৯৮৭-৮৮ সালে ঐতিহ্যবাহী লাকুটিয়া খালের দু’দিকে দুুটি স্লইস গেট স্থাপন করা হলে খালটি নাব্যতা হারায়। অসংখ্য দখলদার খালের ওপর ছোট ছোট স্থাপনা নির্মাণ করে। প্রতিদিনই বাড়ছে দখলদারের সংখ্যা। লাকুটিয়া খালের সিটি কর্পোরেশনের অংশ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের। তিনি জানান, বছর দুয়েক পূর্বে সিটি কর্পোরেশন খাল পরিস্কার পরিচ্ছন্ন অভিযান শুরু করলেও আর বেশিদূর এগোয়নি। ফলে খালটির মরকখোলা পোলের অংশে যেখানে জেলখালের সাথে যুক্ত হয়েছে সেখানে আবর্জনার স্তুপ তৈরি হয়েছে। এখান থেকে পানি প্রবাহ নেই বললেই চলে। তার মতে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৭টি খাল খনন কর্মসূচির মধ্যেই এ খালটির ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেয়া দরকার ছিল। এ ব্যাপারে তিনি সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ ব্যাপারে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (প্রকৌশল শাখা) মো. হুমায়ুন কবির জানান, বরিশালের সবগুলো খালের ব্যাপারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা দেয়া আছে। যা অনুমোদন হলে বাস্তবায়ন করা হবে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদ বিন অলীদ জানান, লাকুটিয়া খালটি খননের ব্যাপারে পানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আপাতত কোন পরিকল্পনা হয়নি। তবে পর্যায়ক্রমে নগরীর অন্যান্য খালগুলোও খননের আওতায় আসবে বলে জানান তিনি।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।