এইচ.এম.এ রাতুল: বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার মশাং গ্রামের প্রতিবন্ধী যুবক মেহেদী হাসান বেপারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত কার্যক্রম চলছে ঢিমেতালে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে মেহেদীর বাবা কাশের বেপারীর অভিযোগ তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে মামলা দায়েরের পর সন্দেহজনক দুইজনকে আটক করে উজিরপুর থানা পুলিশ। তবে মেহেদীর বাবার অভিযোগ হত্যাকান্ডের মূল অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হওয়ায় তার পরিবার রয়েছে অজানা আতঙ্কে। আর পুলিশ বলছে, তাদের তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে মেহেদী হত্যার বিচার চেয়ে এলাকায় পোস্টারিং করেছে স্থানীয়রা।
নিহত মেহেদীর পরিবার, স্থানীয় এবং থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ আগস্ট উজিরপুর উপজেলা ওটরা ইউনিয়নের মশাং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত বাড়ির জঙ্গল থেকে প্রতিবন্ধী যুবক মেহেদী ব্যাপারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের ভাষ্যমতে, নিহত মেহেদীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন থাকায় ঘটনাটি হত্যা হতে পারে।
নিহত মেহেদীর বাবা কাশেম বেপারী জানান, ছেলের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার খবর পেয়ে তিনি বাক শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। ওইদিন ঘটনাস্থলে যাওয়া স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন মেহেদীর মরদেহ উদ্ধারের সময় তার মাথার চারা ভাঙা, পা এবং হাত ভাঙা এবং অন্ডকোষ গলানো ছিল। কিন্তু মামলার এজাহারে তা সঠিকভাবে উল্লেখ করা হয়নি বলে দাবী তার।
তিনি বলেন, স্থানীয় মাদক কারবারীদের সাথে দ্বন্দ্বের জের ধরে তার ছেলেকে হত্যা করা হতে পারে বলে মনে করেন তিনি। তবে তার ছেলে মাদকতো নয়-ই সিগারেটও পান করতেন না বলে দাবী তার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থানীয় মাদক কারবারীরা তার প্রতিবন্ধী ছেলেকে দিয়ে হয়তো মাদক আনা-নেওয়া করাতো এবং সেই দ্বন্দের জেরেই তাকে হত্যা করেছে।
এদিকে মেহেদীর পিতার দায়েরকৃত মামলায় সন্ধিগ্ধ দুইজনকে আটক করেছে উজিরপুর থানা পুলিশ। তারা জেল হাজতে রয়েছে। আর আটককৃত জামাল খান ও সৌরভ হালদারের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে মাদকসহ বিভিন্ন আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, মাদক ব্যবসায়ী জামাল ও সৌরভ ওই এলাকার শীর্ষ মাদক কারবারী মঞ্জু খানের লোক হওয়ার তারা আটক হওয়ার পর থেকেই নিহত মেহেদির পরিবারের লোকজনের উপর নজরদারী করছে। এতে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে বলে জানান মেহেদির বাবা কাশেম বেপারী।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উজিরপুর থানার এসআই শফিকুল ইসলাম জানান, মৃতদেহের মাথায় আঘাত, গলায় কালো দাগ, নাকমুখে রক্ত ছিল। ধারনা করা হচ্ছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। তবে মামলাটি বর্তমানে ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারতি জানাতে পারেননি।
ডিবির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই মিজান জানান, মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। সন্দেহভাজনদের নজরদারীতে রেখেছেন তারা। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এখনো আসেনি।