নিজস্ব প্রতিবেদক : ভবনের ছাদ এবং দেয়াল চুইয়ে পানি প্রবেশ করার অজুহাতে বন্ধ রয়েছে বরিশাল জেনারেল (সদর) হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের এক্স-রে মেশিন। মেশিন চালু করলেই এক ধরনের বিকট শব্দ আসছে ভেতর থেকে। তাই দুর্ঘটনার আশঙ্কায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে জেনারেল হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগ। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের বাধ্য হয়েই হাসপাতালের সামনে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হয়। আর কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুতই সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।
হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আবদুল জলিল জানান, শনিবার (১২ আগস্ট) সকালে রোগীদের এক্স-রে করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন তিনি। মেশিনে ত্রুটির বিষয়টি বুঝতে পেরে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) এবং সিভিল সার্জনকে তাৎক্ষণিক অবহিত করে এক্স-রে কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি জানান, রেডিওলজি বিভাগের ভবনটি বহু বছরের পুরানো। এ কারণে ভবনের ভেতরের অংশে পলেস্তারা খসে পড়ে অনেক আগেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। এখন ভারী বর্ষা হলেই ছাদ এবং দেয়াল চুইয়ে এক্স-রে রুমে পানি প্রবেশ করছে। ওপর থেকে পানি পড়ে মেশিন ভিজে যাচ্ছে। এমন সমস্যা দীর্ঘ বছর ধরে চলে আসছে।
তিনি বলেন আরও বলেন, বরিশালে গত কয়েকদিন টানা বৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকালে বিভাগটির দরজা খুলতেই এক্স-রে রুমের মেঝে পানিতে তলানো অবস্থায় দেখা যায়। পানি মুছে রোগীদের এক্স-রে করার জন্য মেশিন চালু করতেই ভেতর থেকে হুঁ হুঁ শব্দ আসতে থাকে। তার মধ্যেই তিনজন রোগীর এক্স-রে করেছি। কিন্তু ধীরে ধীরে শব্দ বাড়তে থাকে। ধারণা করা হচ্ছে, ভেতর থেকে বিকট শব্দ হচ্ছে। এভাবে মেশিনটি চালিয়ে রাখলে টিউব ফেটে যেতে পারে। দক্ষ টেকনিশিয়ান ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে তারা। এ কারণে হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করে তাদের পরামর্শে এক্স-রে মেশিন বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবাসিক মেডিকেল অফিসার, সিভিল সার্জন এবং ঢাকা সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরে চিঠি লেখা হয়েছে।
হাসপাতালে আসা রোগী মাকসুদা বেগমসহ একাধিক রোগীরা জানান, গত কয়েকদিন ধরেই এক্স-রে মেশিনটি বন্ধ রয়েছে। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে এক্স-রে করিয়েছেন তারা।
বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল জানান, এক্স-রে মেশিনটিতে পানি ঢুকে সমস্যা হয়েছে। মেশিনটি দ্রুত চালু করার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূত্রে জানা গেছে, ১৯১২ সালে নগরীর উত্তর জনপদে স্থাপিত হয় বরিশাল সদর হাসপাতাল। একই সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পাশে স্থাপিত হয় এক্স-রে বিভাগ। প্রতিষ্ঠাকালীন সংযোজিত পুরানো পদ্ধতির মেশিন দিয়েই রোগীদের এক্স-রে কার্যক্রম চলছে। তার ওপর দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বন্ধ মেরুদন্ডে এক্স-রে করার মেশিনটি। যেই মেশিনটি সচল সেখানে প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন রোগীর এক্স-রে করা হয়। বিভাগটি বন্ধ থাকলে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের বাধ্য হয়েই হাসপাতালের সামনে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হয়।