ঢাকামঙ্গলবার , ৯ জানুয়ারি ২০২৪
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি
  6. কৃষি
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চাকরির খবর
  10. জনদুর্ভোগ
  11. জাতীয়
  12. জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪
  13. ধর্ম
  14. নারী ও শিশু
  15. ফিচার

যে কৌশলে জয়ী হলো আওয়ামী লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদন
জানুয়ারি ৯, ২০২৪ ১২:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ডেস্ক রিপোর্ট : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে আওয়ামী লীগ যেসব কৌশল নিয়েছিল, তা সফল হয়েছে। দ্বাদশ সংসদে পাঁচটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা সদস্য হচ্ছেন। আওয়ামী লীগের ২২২ জন, জাতীয় পার্টির ১১ জন, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টির একজন করে এবং স্বতন্ত্র ৬২ জন বিজয়ী প্রার্থী সংসদ সদস্য হচ্ছেন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভোটে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা পেয়েছেন ৭৪.৫৮ শতাংশ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ২০.৭৪ শতাংশ, জাতীয় পার্টি ৩.৬৮ শতাংশ ও বাকি তিন রাজনৈতিক দল পেয়েছে ১ শতাংশ ভোট।

জাতীয় পার্টি যে ১১টি আসনে জয়ী হয়েছে, সবগুলোই আওয়ামী লীগের ছাড় পাওয়া ছিল। ছাড়ের বাইরে একটি আসনেও জাতীয় পার্টি জয় পায়নি। জাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টি নৌকা প্রতীকেই লড়েছে। কল্যাণ পার্টির আসনেও ছিল ছাড়।

নির্বাচন সফল করার পেছনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার অন্যতম কৌশল ছিল দলীয় প্রার্থীর বাইরে নিজ দলের নেতাদের স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা উন্মুক্ত করা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কৌশলের কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটে দলের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী প্রার্থীও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে পরাজিত হয়েছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য কালের কণ্ঠকে বলেন, বেশির ভাগ স্বতন্ত্র নির্বাচিতরা আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের পদধারী নেতা। এতে তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় কোন্দল হবে বলে মনে করছি না। শপথের পর সবাই মিলে কাজ করবেন।

আ. লীগের পরেই স্বতন্ত্রের অবস্থান:
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে অনেক জায়গায় আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোট শরিকদের হারতেও হয়েছে। এমনকি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া কয়েকটি আসনেও লাঙলকে হারতে হয়েছে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে। ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের শরিক ও জাতীয় পার্টির ভরাডুবিতেও শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে স্বতন্ত্র কৌশল।

হবিগঞ্জ-৪ আসনে এক লাখ ৫১ হাজার ভোটের ব্যবধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও যুবলীগ নেতা সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের কাছে পরাজিত হয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।

ঢাকা-১৯ আসনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান হেরেছেন। এ আসনে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশুলিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম।
যশোর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াকুব আলীর কাছে পরাজিত হয়েছেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য।

ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের আরেক আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন তৃতীয়বারের মতো দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্যাহকে পরাজিত করেছেন।

আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক ও নেত্রকোনা-৩ আসনে দল মনোনীত প্রার্থী অসীম কুমার উকিল স্বতন্ত্র প্রার্থী ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও প্রায় দুই হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে দল মনোনীত প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাস স্বতন্ত্র ও মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ ফয়সালের কাছে পরাজিত হয়েছেন।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু কুষ্টিয়া-২ আসনে জোটের প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন। ইনু সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিনের কাছে হেরেছেন।

মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ। তিনি কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনার কাছে হেরে।

জোটের তিন শরিক দলকে আওয়ামী লীগ ছয়টি আসন বণ্টন করে দেয়। এর মধ্যে শুধু বরিশাল-২ থেকে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং বগুড়া-৪ আসনে জাসদের রেজাউল করিম তানসেন জয়ী হয়েছেন।

পিরোজপুর-২ আসনে জাতীয় পার্টির (জেপি-মঞ্জু) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু তাঁর একসময়ের এপিএস মহিউদ্দিন মহারাজের কাছে পরাজিত হয়েছেন।

ঢাকা-১৮ আসনে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের স্ত্রী শেরীফা কাদেরের বিপরীতে কোনো আওয়ামী লীগ প্রার্থী থাকবেন না, এমন সিদ্ধান্তের পর জাপা নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি হয়। কিন্তু ভোটের ফলাফলে শেরিফা কাদের মাত্র ছয় হাজার ৪২৯ ভোট পেয়ে এখন জামানত হারাতে যাচ্ছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী খসরু চৌধুরী বিজয়ী হয়েছেন।

বরগুনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু তৃতীয় হয়েছেন। জয়ী হয়েছেন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার টুকু।

গাজীপুর-৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি প্রায় ১২ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন দলের নেতা ও ঢাকসুর সাবেক ভিপি আক্তারুজ্জামানের কাছে।

স্বতন্ত্র ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আলোচনায় ছিল ফরিদপুর-৩ আসন। ভোটের পর ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদের কাছে পরাজিত হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক। আওয়ামী লীগের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমকে মানিকগঞ্জ-২ আসনে পরাজিত করেছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহম্মেদ।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ কালের কণ্ঠকে বলেন, স্বতন্ত্রদের জেতানো আওয়ামী লীগের কৌশল ছিল না। আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা।

সর্বোচ্চ ভোট শেখ সেলিমের, কম কামাল মজুমদারের
নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গড় ভোট পড়েছে ৪১.৮০ শতাংশ। দেশের ২৯৮টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে গোপালগঞ্জ-৩ আসনে। এ আসনে ভোট পড়েছে ৮৭.২৪ শতাংশ। অন্যদিকে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে ঢাকা-১৫ আসনে। এ আসনে ভোটের হার ১৩.০৪ শতাংশ।

নির্বাচন কমিশনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গোপালগঞ্জ-৩ আসনে দুই লাখ দুই হাজার ৯৭ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে দুই লাখ ৫৩ হাজার ২৪৭টি। ভোটের হার ৮৭.২৪ তাংশ। এ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই লাখ ৪৯ হাজার ৯৬২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির এম নিজাম উদ্দিন লস্কর পেয়েছেন ৪৬৯ ভোট।

ঢাকা-১৫ আসনে তিন লাখ ৪৪ হাজার ৫০৭ ভোটের মধ্যে পড়েছে ৪৪ হাজার ৯৩৬ ভোট। ভোটের হার ১৩.০৪ শতাংশ। এ আসনে আওয়ামী লীগের কামাল আহমেদ মজুমদার নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৬৩২টি।

নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ৮০টিতে ভোট পড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে ঢাকা-১২ আসনে। এ আসনে ভোট পড়েছে ৩০.৫ শতাংশ। এ আসন থেকে বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিজয়ী হয়েছেন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বরাবরের মতো সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন গোপালগঞ্জ-২ আসনের শেখ ফজলুল করিম সেলিম। তিনি ভোট পেয়েছেন দুই লাখ ৯৫ হাজার ২৯১টি। তাঁর নিকটতম জাতীয় পার্টির কাজী শাহীন পেয়েছেন এক হাজার ৫১৪ ভোট। দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান দুই লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৭।

নির্বাচনে সবচেয়ে কম ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন ঢাকা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. আওলাদ হোসেন। তিনি ভোট পেয়েছেন ২৪ হাজার ৭৭৫টি।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।