স্টাফ রিপোর্টার:: আওয়ামী লীগের আমলে প্রতিষ্ঠিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন বিভিন্ন ইউনিটের গুরুত্বপূর্ণ পদধারী।অনেকে হাসিনার পতনের পর পাল্টেছেন ভোল,অনেকে রয়েছেন চুপচাপ,কেউ কেউ কাজ করে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ কে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের একের পর এক মিছিল -নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এই সংগঠনের এমন সক্রিয়তা কীভাবে সম্ভব হচ্ছে?
সম্প্রতি ১৩ নভেম্বরের আওয়ামী লীগের ঘোষিত লকডাউনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফের সক্রিয় হয়েছে ছাত্রলীগ। সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সংগঠনের নেতাকর্মীরা মশাল মিছিল, বিক্ষোভ এবং সাংগঠনিক সভাসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এই তৎপরতার পেছনে ভূমিকা রাখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার ও ২০১১ সালের ৯ জুলাই ঘোষিত বরিশাল জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের অসিম জসিম কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক তৌছিক আহমেদ রাহাত।তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে নতুনভাবে সংগঠিত ও সক্রিয় রাখার জন্য সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “রাহাত ভাই নিয়মিত খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তাঁর নির্দেশনায়ই লকডাউনকে ঘিরে মিছিল ও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”অবৈধ ইউনুস সরকারকে উৎখাত করতে কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি গ্রহণ করবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কর্মসূচির ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। ১০ নভেম্বর আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল পেজে “১৩ নভেম্বর লকডাউনের সমর্থনে ও দখলদার ইউনুসের পদত্যাগের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মশাল মিছিল” শিরোনামে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। পরদিন, ১১ নভেম্বর ছাত্রলীগের অফিসিয়াল পেজে “অবৈধ ক্যাঙারু ট্রাইব্যুনাল বাতিল ও ফ্যাসিবাদী ইউনুস সরকারের পদত্যাগের দাবিতে মশাল মিছিল” শিরোনামে আরেকটি ভিডিও প্রকাশ পায়। এদিকে ছাত্রলীগের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে,” যখনই কোনো ধরনের মিছিল মিটিং করার প্রয়োজন পড়ে তখনই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি নেন এবং সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেন।বর্তমানে তিনি ট্রেনিং এর নামে ময়মনসিংহ অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৌছিক আহমেদ রাহাত বলেন,” সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলাম সত্য এখন এ কথা আমাকে বলে কি লাভ আছে। আমি সম্পূর্ন অরাজনৈতিক। আমি ছাত্রলীগ ছাড়ছি ২০১৪ সালে। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি ২০১৯ ও ২০২৪ সালে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রচারণায় থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি তা অস্বীকার করেন নি। এছাড়াও পত্রিকার সূত্রমতে ২০২১ সালের ২৫ মে এক যুগ পর তাদের কমিটি ভেংগে দেয়া হয়েছিল।”
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সংগঠনের সাবেক আহ্বায়ক,”আমরা খুজতেছি কারা এমন করতেছে যদি আইডেন্টিফাই করতে পারি তাহলে আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবো।”
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব ইফতেখার সায়েম জানান : যারা এই গুলো করতেছে তারা মাক্স পরে মিছিল করতেছে ফলে এদের চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত এদের চিহ্নিত করা এবং সেই সাথে শিক্ষকদের উচিত এদের চিহ্নিত করতে সাহায্য করা। যার ফলে সকল শিক্ষার্থীরা নিরাপদে থাকবে।
