ঢাকাশনিবার , ২১ অক্টোবর ২০২৩
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি
  6. কৃষি
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চাকরির খবর
  10. জনদুর্ভোগ
  11. জাতীয়
  12. জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪
  13. ধর্ম
  14. নারী ও শিশু
  15. ফিচার

বেসরকারি পরিবহনে যাত্রীসেবার মান বাড়লেও কমেছে বিআরটিসির

নিজস্ব প্রতিবেদন
অক্টোবর ২১, ২০২৩ ১:৫৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

এইচ.এম.এ রাতুল : দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বেসরকারি পরিবহন সেক্টরে নিত্য নতুন ও উন্নত সেবা প্রদান করে বিলাসবহুল বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। বেসরকারি পরিবহনগুলোতে যাত্রী সেবার মান বাড়লেও কমেছে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির। জোড়াতালি দিয়ে চলছে বিআরটিসি বাসগুলো। আর এ কারণে সরকারি এ পরিবহন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন যাত্রী সাধারণ। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, যাত্রী সংকটে এরই মধ্যে কয়েকটি রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক রুটে ধীরে ধীরে কমে আসছে বাসের সংখ্যাও। এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিআরটিসি বাস যাত্রী সেবা দিয়ে ৪ কোটি ৬৪ লাখ আয় করলেও বর্তমানে যাত্রী সংকটে ভূগছে বরিশাল বিআরটিসি বাস ডিপো। সঠিক পরিচালনার অভাবকে দায়ী করে সচেতন নাগরিকরা বলছেন, শুধু মুনাফা নয়, বিআরটিসি’র সুনাম ধরে রাখতে যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।

বিআরটিসি বাস ডিপো সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৩ সালে বিআরটিসি বরিশাল ডিপোটি প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮২ সালে তৎকালীন সামরিক সরকার ডিপোটি বন্ধ করে দেয়। ১৯৮৭ সালে পুনরায় বাস ডিপো চালু হওয়ার পর থেকেই জোড়াতালি দিয়ে চলছে সরকারি এ সংস্থার বরিশাল শাখাটি। জানা গেছে, ডিপোতে বর্তমানে ৫৩টি বাস যাত্রী সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে ভারী যন্ত্রাংশ মেরামতে রয়েছে ১টি। এছাড়াও হালকা মেরামতে বাস রয়েছে আরো তিনটি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআরটিসির এক কাউন্টার মাস্টার জানান, ডিপোর ৪৯টি বাস গড়ে প্রতিদিন রাস্তায় চলাচল করার কথা। কিন্তু বাস্তবে কোনদিন ১২ এবং ১৭টি বাস চলাচল করে। কারণ, বাসগুলো চলাচলের অনুপযোগী। তাছাড়া চালক ও হেলপারদের ব্যবহার ভালো না। তারা যেখানে খুশি সেখানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করায়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাস গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। প্রায় প্রতিনিয়তই কোথাও না কোথাও রাস্তার মধ্যে গাড়ি অচল হয়ে যায়। তিনি জানান, ২৫ বছর ধরে কাউন্টার মাষ্টার এর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। গত বিএনপি সরকারের সময় যে বাস আছে, সেই বাসই সংস্কার করে এখনো চলছে। বর্তমান সরকারের সময় কয়েকটি এসি বাস আসলেও তার অধিকাংশ এসি-ই নষ্ট। অনেক গাড়ি ডিপোতে মেরামতের জন্য পরে রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক কাউন্টার মাস্টার জানান, কোনদিন ১২ আবার ১৭টি বাস চলাচল করছে। বাসগুলো গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই যাত্রী নিয়ে যান্ত্রিক গোলযোগে বিভিন্ন রুটে দাঁড়িয়ে গেছে। এ কারণে যাত্রীদের যেমনি ভোগান্তিতে পড়তে হয়, তেমনি যাত্রীদের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়াতে হয় স্টাফদের। এছাড়া পথিমধ্যে বাস দাড়িয়ে যাওয়ায় অনেক যাত্রী নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে যেতে না পেরে তাদের কাছে এসে অভিযোগ করেন।

বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোর ট্রাফিক ইনর্চাজ মশিউর রহমান বলেন, বরিশাল থেকে পাথরঘাটা, কুয়াকাটা, আমুয়া, তালতলী, মঠবাড়িয়া, খুলনা, সাতক্ষীরা রুটে চলাচল করছে বিআরটিসির বাস। যাত্রী সংকটের কারণে গত চার বছর ধরে বরগুনা এবং বেনাপোল রুটে বন্ধ রয়েছে বাস চলাচল। এছাড়া কুয়াকাটা, পটুয়াখালী, বাউফল, বেতাগী, ভান্ডাারিয়া এবং বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য প্রতিদিন ১৭টি এসি বাস চলাচল করছে। তবে এসব বাসের অধিকাংশই এসি এখন সচল নেই বলে জানা গেছে। এদিকে বর্ষার সময় দক্ষিণাঞ্চলে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির অনেক বাসে ছাতা মাথায় দিয়ে ভ্রমনের অভিযোগও রয়েছে যাত্রীদের। তাই সম্প্রতি পুরনো কিছু বাস মেরামত করে চালানোর চেষ্টা চলছে।

ঢাকা থেকে বরিশালে আসা যাত্রী কাওছার হোসেন বলেন, সরকারি এই বাসে একজন যাত্রীর নূন্যতম সুযোগ সুবিধা নেই। সরাসরি রুটের টিকিট কেটে লোকাল বাসের মতো রাস্তা থেকেই যাত্রী নেয়। এক ঘন্টার পরিবর্তে দুই-আড়াই ঘণ্টা লাগে গন্তব্যে পৌঁছতে। এসব কারণে অনেক যাত্রী এখন এই বাসে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এসি বাসের ভাড়াও নিচ্ছে দ্বিগুণ। বাসের ভিতরেও নেই পরিবেশ। নোংরা, ময়লা স্তুুপ থাকে। তাছাড়া চালক ও সুপারভাইজারের ব্যবহারও ভালো না। একই অভিযোগ করেছেন খুলনাগামী যাত্রী লোকমান হোসেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলে ঢাকাগামী পরিবহন বাড়লেও বিআরটিসি বাসের সংখ্যা দেড়যুগ আগে যেমন ছিল, তেমনি রয়েছে। সরকারি হলেও লক্কর ঝক্কর বাস দিয়েই সেবা দেয়া হচ্ছে। আবার অতিরিক্ত ভাড়াও নেয়া হচ্ছে। দীর্ঘবছর যাতায়াতের কারণে সব সমস্যা মাথায় নিয়ে বাসটিতে আসা-যাওয়া করছেন বলেন তিনি।

বরগুনাগামী যাত্রী রবিউল হাসান জানান, বরিশাল থেকে পাথরঘাটায় সরাসরি বাসে আসতে বিআরটিসি ছাড়া তেমন উপায় নেই। কিন্তু এই বাস পথে পথে থামায়। ইচ্ছে মতো যাত্রী তোলে।

এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিআরটিসি বাস যাত্রী সেবা দিয়ে ৪ কোটি ৬৪ লাখ আয় করছে। এছাড়া প্রতি মাসে গড়ে ৪০-৪৫ লাখ টাকা মুনাফা করছে বলে দাবি করেন হেড ক্যাশিয়ার (হিসাব ইনচাজর্চ) ফারুক আহম্মেদ।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সাবেক সভাপতি অধ্যাপিকা শাহ সাজেদা বলেন, বেশি আয় আর মুনাফা দেখিয়ে সরকারি এই সংস্থাটি দায়ভার এড়াতে পারে না। স্বাধীনতার চার বছর বিআরটিসি বাস যাত্রী সেবায় ভালো ছিল। কিন্তু এরপর তারা তাদের সুনাম ধরে রাখতে পারেনি। সরকার যাত্রী সেবায় ভালো মানের বাস আনলো তা সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারছেনা কর্মকর্তারা। ১৫-২০ বছরে আগে ৫ বছরের মধ্যে একটি বাস অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে তিনি যাত্রীসেবার মান বাড়ানোর দাবি জানান।

বিআরটিসি বরিশাল ডিপোর ম্যানেজার মো. জামশেদ আলী মুঠোফোনে বলেন, যাত্রী সেবার মান বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করছি, বিআরটিসি তার পুরনো সুনাম ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।